ইসরাইলকে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগে গাজার রাফায় আশ্রয় নেয়া কমপক্ষে ১০ লাখ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা করতে বলেছেন তিনি। জো বাইডেন বলেন, ওইসব সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা ছাড়া রাফায় অভিযান চালানো উচিত হবে না ইসরাইলের। তিনি আরও বলেছেন, বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ দক্ষিণ গাজার ওই শহরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন। তাদের সুরক্ষা প্রয়োজন। রাফায় অবস্থানরত ফিলিস্তিনি একজন চিকিৎসক বলেছেন, আতঙ্কের মধ্যে রাফায় বসবাস করছেন এসব মানুষ। ইসরাইলকে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্কও। তিনি বলেছেন, রাফায় হামলা হবে ভয়াবহ। অসংখ্য সাধারণ মানুষ মারা যেতে পারেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
রাফায় ব্যাপক স্থল হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার আশঙ্কা ওই শহরে আত্মগোপন করে আছেন যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসের অস্ত্রধারীরা। তাদেরকে তিনি পরাজিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কয়েক দিনে ইসরাইলের তীব্র আকাশপথের হামলার মুখে রাফা। এরই মধ্যে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। গাজায় গাদাগাদি করে বসবাস করা ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে কমপক্ষে অর্ধেকই এখন মিশর সীমান্তের কাছে এই শহরে অবস্থান করছেন। ৭ই অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগে এই শহরের জনসংখ্যা ছিল মাত্র আড়াই লাখ। বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ সেখানে অস্থায়ী আশ্রয় বা তাঁবুতে বসবাস করছেন। তাদের অবস্থা দুঃসহ। পানি ও খাদ্যের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। রোববার ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা রাফায় ঘেরাও দিয়ে দু’জন ইসরাইলি বংশোদ্ভূত আর্জেন্টাইন জিম্মিকে মুক্ত করেছে।
এ অবস্থায় সোমবার ওয়াশিংটনে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে মিটিং করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় তিনি রাফার সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। বাইডেন বলেন, বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত। তারা অসংখ্যবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তরে সহিংসতা থেকে বাঁচতে সরে গেছেন রাফায়। সেখানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। তাদেরকে সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন। শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি, গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার বিরোধী আমরা। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস বলে, সেখানকার শরণার্থীদের বিষয়টি যথাযথভাবে বিবেচনা না করে রাফায় ইসরাইলের বড় ধরনের অপারেশন সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে পরিকল্পিত অভিযানের বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সতর্ক করেছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সোমবার বলেছেন, রাফায় আরও অভিযান চালানোর আগে ইসরাইলের উচিত থেমে যাওয়া এবং গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করা। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলকে অস্ত্র দেয়া বন্ধ করতে। কারণ, গাজায় এই অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে সবচেয়ে কঠোর সতর্কতা দেয় সৌদি আরব। তারা বলে, যদি রাফায় অভিযান চালানো হয় তাহলে অত্যন্ত করুণ পরিণতি ভোট করতে হবে ইসরাইলকে।
মন্তব্য করুন