জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য সৌদি আরব সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস জনপ্রতিনিধি, ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ, দুইটি পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
উপজেলা পরিষদের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশে কোরবানির দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি আবর সরকার। এ বছরও মেলান্দহ উপজেলায় ৩০ কার্টন মাংস আসে। প্রত্যেকটি কার্টনে ১০টি প্যাকেটে প্রায় ৩০ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসাবে ৩০ কার্টনে ৯০০ কেজি মাংস ছিল।
দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী মধ্যে ২ কার্টন, জামিয়া হুসাইনিয়া আরবিয়া পুরুষ ও মহিলা মাদ্রাসায় ২ কার্টন, ১১টি ইউনিয়নে ১১ কার্টন, মেলান্দহ পৌরসভা ও হাজরাবাড়ী পৌরসভায় ২ কার্টন করে বিতরণ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৭ কার্টন বিতরণের তথ্য দিলেও বাদবাকি ১৩ কার্টুন কোথায় বিতরণ করা হয়েছে সেই তথ্য দেওয়া হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, ‘আমরা মিথ্যা বলব না।আমাদের কেউ এক প্যাকেট, কেউ অর্ধেক প্যাকেট করে পেয়েছি।’
চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন ভুট্টো বলেন, ‘এক কার্টন পেয়েছিলাম মেম্বারদের দিয়ে দিয়েছি। আমি এর আশে পাশেই যাই না। মেম্বারই ১২ জন, গ্রাম পুলিশ রয়েছে। এখানে সাধারণ মানুষরে কেমনে দিবে। মেম্বারদের বলেছি, যেমনে ভাল হয় দিয়ে দেও।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম লুৎফর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘খুব সম্ভবত ২৪ কার্টন বরাদ্দ ছিল হয়ত। ওটা বন্ধের দিনে আসছে, তবে যতটুকু জানি ১১টি ইউনিয়নে ১১টি ও দুইটি পৌরসভায় ২ কার্টন মেলান্দহ বড় মাদ্রাসায় এক কার্টন, গুচ্ছগ্রামে এক কার্টন, এছাড়া উপজেলা অফিসের কর্মচারীরা একটি কার্টন ভাগাভাগি করে নিয়েছে। চেয়ারম্যানদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে এখন তারা কি করবে সেটা তাদের ব্যাপার।’
জামালপুর সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি অজয় কুমার পাল বলেন, ‘গরীব দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য আসা মাংস বিতরণে অনিয়ম এটা নিন্দনীয় কাজ। আমরা চাই এটা সঠিকভাবে গরিব অসহায় এবং দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হোক।’
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘চিঠিতে যে কয়টি কার্টন বরাদ্দ ছিল সে কয়টি কার্টন দেওয়া হয়েছে। কম দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’