ফিলিস্তিনি জাতীয় পরিষদের (পিএসি) চেয়ারম্যান রুহি ফাত্তুহ বৃহস্পতিবার ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচের গাজা অবরোধ ও ধাপে ধাপে দখলের প্রস্তাবকে ‘গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
তিনি বলেন, হামাস আত্মসমর্পণ না করলে এবং সব বন্দিকে মুক্তি না দিলে গাজার পূর্ণ অবরোধ ও পরবর্তীতে অঞ্চলটি দখল করার স্মোটরিচের আহ্বান ‘গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের নীতির সরাসরি স্বীকৃতি’—যা আন্তর্জাতিক আইন, চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন ও রোম সংবিধির আওতায় সম্পূর্ণ যুদ্ধাপরাধ।
ফাত্তুহ জোর দিয়ে বলেন, এ ধরনের ‘উস্কানিমূলক বক্তব্য’ এখন আর কেবল চরমপন্থি মতামত নয়, বরং সরকারিভাবে কার্যকর হচ্ছে। প্রায় দুই বছরের অবরোধের মধ্যে এটি স্পষ্ট—যেখানে ত্রাণকেন্দ্রগুলো লক্ষ্যবস্তু, অবকাঠামো ধ্বংস এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির চেষ্টা চলছে। তার ভাষায়, ইসরাইল ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে প্রত্যক্ষ অংশীদার’।
তিনি দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতাকেও নিন্দা জানান।ফাত্তুহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদকে তাদের আইনি ও রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজা সিটি দখল করে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে। এজন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ, ইসরাইলি নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং আন্তর্জাতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে, স্মোটরিচ তার কথিত ‘গাজা বিজয় পরিকল্পনা’তে গাজা সিটি ও শরণার্থী শিবিরগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্র ঘোষণা করে হামাস সদস্যদের ‘ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় মৃত্যুর’ মুখে ঠেলে দেওয়ার কথা বলেন। এছাড়া তিনি ধাপে ধাপে গাজা দখল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেন।২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর থেকে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে অন্তত ৬৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।