বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে কর্মরত বাংলাদেশিদের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বৈদেশিক ভাতা বাড়িয়েছে সরকার। নতুন হার কার্যকর হবে ১ জানুয়ারি থেকে। এই অর্থ পরিশোধ করা হয় বৈদেশিক মুদ্রায়।
গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বৈদেশিক ভাতা বৃদ্ধির কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার অর্থ বিভাগের এ–বিষয়ক উপস্থাপিত প্রস্তাব অনুমোদন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
চিঠিতে অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, ভাতা বৃদ্ধির আগে ২০১২-২০২৩ সাল পর্যন্ত ৬০ দেশের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে দেশগুলোর মুদ্রা বিনিময় হারের সমন্বয় বিবেচনা করা হয়েছে।
বিশ্বের ৬০ দেশে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন রয়েছে। সেখানে কর্মরতরা নিয়মিত বেতন ও ভাতার বাইরে বৈদেশিক ভাতা পান। দেশের ভেতরের হারের বেতন-ভাতায় বিদেশে খরচ মেটানো সম্ভব হয় না বলে বৈদেশিক ভাতা দেওয়া হয়। ভাতা বৃদ্ধিতে নতুন করে ব্যয় বাড়বে ৩৩ কোটি টাকার বেশি।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আধা সরকারি চিঠিতে অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই চিঠিতে বৈদেশিক ভাতা ও আপ্যায়ন ভাতা ১০০ শতাংশ এবং শিক্ষা ভাতা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি ছিল।
তবে বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ কিছুটা কমিয়ে শুধু বৈদেশিক ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাবই অনুমোদন করেছে। আপ্যায়ন ভাতা ও শিক্ষা ভাতা আগের হারই বহাল থাকবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৬ জানুয়ারি আরেকটি আধা সরকারি চিঠিতে অর্থ বিভাগকে এবং মূল্যস্ফীতির সঙ্গে ডলারে মুদ্রা বিনিময় হার সমন্বয় করে ৬০টি দেশকে এ, বি ও সি—তিন শ্রেণিতে ভাগ করে দেয়। এরপর অর্থ উপদেষ্টা এ শ্রেণিতে রাখা দেশের জন্য ৩০ শতাংশ, বি শ্রেণির জন্য ২৫ শতাংশ এবং সি শ্রেণির জন্য ২০ শতাংশ পর্যন্ত ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। এতে বাড়তি ব্যয় হবে ৩৩ কোটি টাকার বেশি।
মিশনগুলোতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে অন্য মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের জন্যও এ হার প্রযোজ্য হবে এবং তাঁদের জন্য বাড়তি ব্যয় হবে বছরে ৬ কোটি টাকা।
ভাতা বৃদ্ধির চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, পাঁচ বছর পরপর মিশনের কর্মচারীদের বৈদেশিক, শিক্ষা ও আপ্যায়ন ভাতা পুনর্নির্ধারণের কথা থাকলেও ২০১২ সালের পর তা হয়নি। বাংলাদেশের বৈদেশিক ভাতা এবং আপ্যায়ন ভাতাও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।
যদিও এই ভাতা বৃদ্ধিকে কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে তারপরও এই ভাতা বৃদ্ধিতে নানা সমালোচনা হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সাশ্রয়ের পরিবর্তে ব্যয় বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত সরকারের বাজেট ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।