তুরস্কে জমজমের নাম করে নকল পানি উৎপাদন ও বিক্রির একটি বিশাল চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মাত্র পাঁচ মাসে প্রায় ৯০ মিলিয়ন তুর্কি লিরা (২.৫ মিলিয়ন ডলার) উপার্জন করেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিলাল জমজমের নাম করে প্রতিদিন ২০ টন নকল পানি উৎপাদন করত, যা থেকে দৈনিক ৬ লাখ লিরা (২২ হাজার ডলার) আয় করত। তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আদানায় তার গুদাম থেকেই এই নকল পানি বাজারে সরবরাহ করা হতো। ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন শহরের বাজারে বিক্রি হওয়া জমজম পানির বড় অংশই তার উৎপাদিত বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
সরকারি কর্র্তৃপক্ষ গুদামে অভিযান চালিয়ে ১৫ টন ভুয়া জমজমের পানি জব্দ করেছে। এই পানি সাধারণ কলের পানি হলেও সেগুলোর প্যাকেজিংয়ে এমন লেবেল লাগানো ছিল, যা দেখে ক্রেতারা সেটিকে আসল জমজম পানি বলে ভাবতে বাধ্য হতেন। প্যাকেজিংয়ে আরবি লেখা এবং সৌদি আরবের নাম ব্যবহার করা হতো, যা জমজমের পানির সঙ্গে ধর্মীয় আবেগ জড়িত থাকা মুসলিমদের বিভ্রান্ত করতে যথেষ্ট ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে বিলাল স্বীকার করেছে যে, সে সৌদি আরব থেকে আসা গাড়ি থেকে কিছু আসল জমজমের পানি কিনে সেটি কলের পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিত। তবে অভিযানের আগে পর্যন্ত কোনো গ্রাহকের কাছ থেকে অভিযোগ পায়নি বলে দাবি করেছে সে।
তুরস্কে জমজম পানির চাহিদা বিশেষত রমজানের সময় অত্যন্ত বেশি। ছোট বোতল থেকে শুরু করে বড় পাত্রে জমজম পানি বাজারে পাওয়া যায়। ধর্মীয় আবেগের কারণে মুসলমানরা জমজমের পানি কেনার সময় সতর্কতা অবলম্বন করলেও ভুয়া পণ্য চেনা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।
অভিযানে জব্দ হওয়া ভুয়া পানি ধ্বংস করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং গুদামটি সিলগালা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চলছে।
তুরস্কে জমজমের নামে ভুয়া পানি বিক্রয়ের এমন চক্রের সন্ধান মুসলমানদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি জিনিসের সঙ্গে প্রতারণা শুধু আইনত অপরাধ নয়, বরং ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাতের শামিল। সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের উচিত এ ধরনের অপরাধ রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।