ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের যুদ্ধের দাওয়াত দিল হুথি বীর যোদ্ধারা – হুঁশিয়ারি দিয়ে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা জানালো ইয়েমেন। গাজা গণহত্যাকে কেন্দ্র করে ইসরাইল এবং ইয়েমেনের মধ্যে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী বলছে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে দখলদার ইসরাইলের আগ্রাসন ঠেকাতে এবার তারা দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইয়েমেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আল-আতিফি বলেন, ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর হাতে বিজয়ের চাবিকাঠি রয়েছে। তারা ইসরাইল, তার পৃষ্ঠপোষক এবং মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে এ নেতা আরও বলেন, একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রয়েছে। ইসরায়েলই নাৎসিদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম আমাদের বিশ্বাসের গভীরে নিহিত বলেও মন্তব্য করেন আল-আতিফি।
ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবে প্রথমবারের মতো হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর এক সপ্তাহ না যেতেই এই ঘোষণা দিলো ইরানের মিত্র দেশটি। এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি গণহত্যা শুরুর পর থেকেই হামাস ও হিজবুল্লাহর পাশে দাঁড়িয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তবে এতদিন নিজ ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলবিরোধী অভিযান চালিয়ে গেলেও এবার তাদের প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের লেবাননে পাঠাতে চায় হুতিরা। খবর তেহরানভিত্তিক প্রেসটিভির।
হুথি আনসারুল্লাহ প্রতিরোধ আন্দোলন বলেছে, ইয়েমেন প্রয়োজনে লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রতিরোধ আন্দোলনের সহায়তায় “হাজার হাজার প্রশিক্ষিত যোদ্ধা” পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়েমেনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে, দেশটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানের পরিকল্পনা করছে। এরইমধ্যে সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে তারা। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সাথে যুক্ত হচ্ছে। তবে তাদের ইসরাইলবিরোধী দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ কবে নাগাদ শুরু হবে সে বিষয়ে কোনো আভাস দেয়নি সানা। গেলো বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার।
এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত লাখ ছাড়িয়েছে। এ গণহত্যার প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুতি আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিত সামরিক বাহিনী এডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইলের জাহাজে হামলা শুরু করে। এই ঘটনায় ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরু করলে, হুতি সমর্থিত সামরিক বাহিনী মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইসরাইলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের জাহাজকে বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ঘোষণা করে।
গেলো দশ মাসে ইসরাইল ও তার মিত্রদেশগুলোর শতাধিক জাহাজ ও লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। পাশাপাশি ইসরাইল ভূখণ্ডেও হামলা চালাচ্ছে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি।