বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল লালমনিরহাটে চীনা অর্থায়নে বিমানঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে ভারতীয় পার্লামেন্টে কথা বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং। ভৌগোলিকভাবে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ স্থান ‘চিকেন নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডোরের একেবারে কাছাকাছি হওয়ায় এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে।নালন্দার সাংসদ কৌশলেন্দ্র কুমারের প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় লোকসভায় এ বিষয়ে কথা বলেন সিং। শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং লোকসভায় তার লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, বাংলাদেশে লালমনিরহাট বিমানঘাঁটিসংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখেছে ভারত। সেইসাথে ২০২৫ সালের ২৬ মে বাংলাদেশ সেনার মিলিটারি অপারেশনসের ডিরেক্টর যে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, সেটিও ভারতের নজর এসেছে। তাতে বলা হয়েছে যে লালমনিরহাট এয়ারফিল্ডকে আপাতত সামরিক কারণে ব্যবহার করার কোনো পরিকল্পনা নেই।’
তিনি আশ্বস্ত করেন, জাতীয় নিরাপত্তার সাথে জড়িত যেকোনো বিষয়ের উপর লাগাতার নজর রাখা হচ্ছে। আর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখতে নয়াদিল্লি যাবতীয় পদক্ষেপ করছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রাণয়ের মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।
আসলে ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে লালমনিরহাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডরের একেবারে কাছেই অবস্থিত। সম্প্রতি জল্পনা ছড়িয়েছিল যে লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে চীন। এমনকি বিমানঘাঁটি গড়ে তোলার কাজের জন্য কয়েকজন চীনা আধিকারিক সেখানে ঘুরে গিয়েছিলেন বলেও দাবি করা হচ্ছে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে গত মে’তে বাংলাদেশ সেনা সদরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজিম-উদ-দৌলা জানিয়েছিলেন, অতীতে লালমনিরহাট এয়ারফিল্ডকে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিল। প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে আবারো সেটিকে চালু করা হচ্ছে। ওই বিমানঘাঁটি চীন ব্যবহার করবে কিনা, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে সরকার যা করবে, সেটা ভেবেচিন্তেই করবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, একটা সময় লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেটি ব্যবহৃত হতো। ১৯৪৭ সালের পরে সেটি ব্যবহার করতো পাকিস্তান। আর ১৯৭১ সালের পরে সেটি ব্যবহার করতো বাংলাদেশ। এরইমধ্যে ২০১৯ সালে সাবেক পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে ওই জায়গায় জমি দেয়া হয়েছিল বাংলাদেশ অ্যারোস্পেস অ্যান্ড অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটিকে।