মসজিদ তহবিলের টাকা দিয়ে সুদের কারবারের অভিযোগ উঠেছে মসজিদ কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বুড়াইচ ইউনিয়নের শৈলমারী বায়তুল মামুর জামে মসজিদে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনাসহ মাদ্রাসার ৬ শতাংশ ওয়াক্ফ করা জমি নিজেদের নামে লিখি নেওয়ায় মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্যা, তাঁর ভাই আব্বাস মোল্যা ও সভাপতির ছেলে বুড়াইচ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম পলাশ মোল্যার বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা জিয়া মোল্যা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সিরাজুল ইসলাম মোল্যা শৈলমারী বায়তুল মামুর জামে মসজিদে গত ৫-৬ বছর সভাপতি ছিলেন। এ সময় তিনি স্থানীয় লোকজনের কাছে মসজিদের টাকার কোনো হিসাব দেননি। মসজিদের টাকা দিয়ে তিনি সুদের কারবার করেন। স্থানীয়রা হিসাব চাইতে গেলে মামলা করার হুমকি দেন তিনি। তাদের অত্যাচারে স্থানীয়রা চলতি বছর ২০ ফেব্রুয়ারি আগের কমিটি বাতিল করে স্থানীয় ফিরোজ আহমেদকে সভাপতি করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শৈলমারী মামুর জামে মসজিদ ও মাদ্রাসার ৬ শতাংশ ওয়াক্ফ করা জমি সিরাজুল নিজেদের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছেন। গ্রামবাসী জমি ফেরত চাইতে গেলে হুমকি দেন তিনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মসজিদের সভাপতি থাকাকালে একটি কাজের জন্য সিরাজুলের কাছ থেকে এক বছরের জন্য ৫০ হাজার টাকা নেন। তিনি তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা কেটে রেখে ৪০ হাজার টাকা দেন। এক বছর অতিক্রম হলে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা নিয়েছেন। পরে দুই মাসের মধ্যে সব টাকা ফেরত দিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া জানান, মসজিদের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সুদের কারবার করেন বলে শুনেছেন।
বর্তমান সভাপতি ফিরোজ আহমেদ জানান, সাবেক সভাপতি মসজিদের কোনো হিসাব দিতেন না। তিনি সুদের করবার করেন বলে শুনেছেন। মাদ্রাসার ওয়াক্ফ করা ৬ শতাংশ জমি তিনি নিজের নামে লিখি নিয়েছেন।
সিরাজুলের ছেলে শরিফুল ইসলাম পলাশ বলেন, তাদের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। গত সোমবার শৈলমারী বাজারে দোকান ঘর নির্মাণ করার সময় জিয়া মোল্যা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এ নিয়ে জিয়া মোল্যার বিরুদ্ধে তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ জন্যই জিয়া তাদের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম মোল্যা বলেন, প্রায় পাঁচ বছর তিনি মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় মসজিদের টাকা দিয়ে অনেক অসহায় পরিবারকে সাহায্য করেছেন। কেউ বলতে পারবে না কারও কাছ থেকে একটি টাকা তিনি লাভ নিয়েছেন। মাদ্রাসার জমি নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
আলফাডাঙ্গার ইউএনও সারমীন ইয়াসমীন জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।