হংকং স্টেডিয়ামের গ্যালারি সেদিন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়েছিল। টিকিটের আকাশছোঁয়া দাম উপেক্ষা করেও মানুষ এসেছিল। কিন্তু তাদের সকল উচ্ছ্বাসে পানি ঢেলে দিয়েছে ইন্টার মায়ামি। যার খেলা দেখতে হংকংবাসীর এমন উন্মাদনা, সেই লিওনেল মেসিকে যে মাঠে এক মিনিটের জন্য নামানো হয়নি। যে কারণে মানুষ তো হতাশই, হতাশ হয়েছে হংকং সরকারও!
প্রাক-মৌসুম প্রীতি ম্যাচে রোববার হংকং একাদশের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জয় পেয়েছে মায়ামি। তবে ম্যাচের ফলাফলকে ছাপিয়ে মেসির না খেলাই এখন আলোচনার তুঙ্গে। আগের ম্যাচে আল নাসেরের বিপক্ষে ৬-০তে হারে মায়ামি। ম্যাচে ৬ মিনিটের জন্য মাঠে ছিলেন ৩৬ বছর বয়সী মেসি। হংকং একাদশের বিপক্ষে ম্যাচের দুইদিন আগে মায়ামি কোচ টাটা মার্টিনোও জানিয়েছিলেন, এই ম্যাচে মেসির শুরু থেকে খেলার সম্ভাবনা বেশি।
এই ঘোষণাতেই বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করে হংকং। আয়োজক কমিটি প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে পুরো আয়োজন সম্পন্ন করে। মেসিকে দেখার জন্য হাজারো দর্শক চড়া মূল্যে টিকেটও কেটেছিল। এমনকি আয়োজকদের অনুদান দিয়েছিল হংকং সরকার। শেষ পর্যন্ত মেসিকে মাঠে নামাননি মায়ামির কোচ। এমনকি আরেক বার্সা তারকা লুইস সুয়ারেজকেও খেলানো হয়নি।
ইন্টার মায়ামির এমন কাণ্ডে অবাক দর্শকরা শেষদিকে দুয়ো দিতে শুরু করেন খোদ মেসিকে উদ্দেশ্য করেই। দর্শকদের রোষ থেকে বাদ যাননি ক্লাবের অন্যতম মালিক ডেভিড বেকহ্যামও।
এএফপি জানায়, এক হাজার হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ হাজার টাকা) খরচ করে টিকিট কিনেছিলেন দর্শকেরা। ৩৮ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত ছিল না। অনেক দর্শক এমনকি স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় রাগে গজরাতে গজরাতে ফেরত চাইলেন টিকিটের টাকাও। দর্শকদের এমন হইচই দেখে মেসিকে না খেলানোয় ম্যাচ শেষে দর্শকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ইন্টার মায়ামি কোচ।
ইএসপিএন জানিয়েছে, মেসি না খেলায় আয়োজক টেটলার এশিয়ার ওপর অসন্তুষ্ট হংকং সরকার। সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মেসি না খেলায় সরকার ও ফুটবল–ভক্তরা আয়োজকদের কার্যক্রমে খুবই হতাশ। আয়োজকদের কাছে সব ফুটবল–ভক্ত ব্যাখ্যা পাওয়ার দাবি রাখে।’
বিবৃতিতে জানানো হয়, মায়ামি-হংকং একাদশ ম্যাচের জন্য হংকংয়ের মেজর স্পোর্টস ইভেন্টস কমিটি (এমএসইসি) ভেন্যু বাবদ ১০ লাখসহ মোট দেড় কোটি হংকং ডলার (১৯ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার) অনুদান দিয়েছিল। এখন আয়োজকদের প্রদেয় অর্থ কেটে নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে, ‘এমএসইসি আয়োজকদের সঙ্গে হওয়া শর্তাবলির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যার মধ্যে মেসি না খেললে তহবিলের পরিমাণ হ্রাস অন্তর্ভুক্ত।’