পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে আজ রবিবার দেশটির দক্ষিণ আন্দিয়ান অঞ্চল সফরকালে স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েন। ২০২২ সালে এ অঞ্চলে দিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকালে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রথমবার অঞ্চলটি সফরে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভর্ৎসনার শিকার হলেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অযাচাইকৃত ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, নিরাপত্তা কমকর্তাদের সামনেই স্থানীয় মানুষজন ‘দিনা একজন খুনি’ বলে চিৎকার করছেন।
সাংবাদিকদের কাছে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে রুথ বার্সেনা নামের এক নারী বলেন, তার প্রয়াত স্বামী লিওনার্দো হ্যাঙ্কোকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিক্ষোভ চলাকালীন গুলি করে হত্যা করেছিল দিনার অনুগত নিরাপত্তা বাহিনী।
ভিড়ের মধ্যে থেকে চিৎকার করে ওই নারী বলছিলেন, ‘আমার স্বামীকে এখানে খুন করা হয়েছে। তারা আমার স্বামীকে মেরেছে এবং এখন তারা চায় আমি শান্ত হই!’
স্থানীয় গণ্যমাধ্যম জানিয়েছে, এই প্রতিবাদের পর পরই ওই নারীকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু আটক করেনি।
২০২২ সালের ডিসেম্বর পেরুর বামপন্থি প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলিওকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার ভাইস প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হন। তিনি পেরুর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। পেদ্রো ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেপ্তার হওয়ার জেরে দেশটিতে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। নতুন প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের জেরে কয়েক ডজন মানুষ মারা যান, বেশিরভাগই দক্ষিণ পেরুর।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী জর্জ ওতারোলা শনিবারের বিক্ষোভকে ‘হতাশাজনক’ হিসেবে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটি রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং এটি খুব গুরুতর ব্যাপার।’ পেরুর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা দায়ীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চালাবে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু একটি কঠিন রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে পাঁচজন প্রেসিডেন্ট পেয়েছিল দেশটি। নতুন প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের জেরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল পেরুর সরকার। অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমা মদদে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় এসেছেন দিনা।