সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ইরানের হামলা দিয়ে শুরু হওয়া দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের যে নজিরবিহীন অবনতি ঘটেছিল, তা ফের স্বাভাবিক হতে চলেছে। টানা ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাল্টা হামলার পর ইসলামাবাদ তেহরানের সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার কথা ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনেয়ারুল হক কাকা সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে এক জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইসলামাবাদ তেহরানের সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্কে ফিরে যেতে রাজি হয়েছে। ফলে দু’দেশে নিযুক্ত ইরান ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতরা শিগগিরই নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে ফিরতে যাচ্ছেন। এদিন বৈঠক শেষে কাকার বলেছেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের আগে ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্ক যেখানে ছিল, সেখানে ফিরে যাওয়া দু’দেশের স্বার্থের জন্যই জরুরি। এক্ষেত্রে ইরানের পক্ষ থেকে গৃহীত প্রতিটি ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরান ও পাকিস্তান দু’টি ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ যাদের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে সম্মান ও অনুরাগের ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক ছিল। পাকিস্তান একটি শান্তিকামী ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেশ। বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কে বিশ্বাসী ইসলামাবাদ। তবে আলোচনার বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে পাকিস্তানের ইরান সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান প্রদেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)। এ ঘটনার জের ধরে পরদিন ইসলামাবাদ তেহরানে নিযুক্ত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং ইসলামাবাদে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে (ছুটিতে থাকা) পাকিস্তানে ফিরে যেতে নিষেধ করে। ফলে কার্যত ইরানের সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় দুই দেশের।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার চেতনার ভিত্তিতে ইরানের সঙ্গে সব বিষয়ে কাজ করার জন্য পাকিস্তানের প্রস্তুত। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘তারা পরিস্থিতি উত্তেজনা কমাতেও সম্মত হয়েছে। দুই দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিজ নিজ রাজধানীতে ফিরে যাওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে’।