শ্রম অধিকার লঙ্ঘনে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে নতুন নীতি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, তা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে তিনি মনে করেন।
আজ রোববার রাজধানীর ইস্কাটনের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ, আরএমজি ও ডিসেন্ট ওয়ার্ক বিষয়ে আলোচনা শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শ্রম অধিকার লঙ্ঘনে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে নতুন নীতি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, তা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে তিনি মনে করেন।
আজ রোববার রাজধানীর ইস্কাটনের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ, আরএমজি ও ডিসেন্ট ওয়ার্ক বিষয়ে আলোচনা শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। এর পেছনে বড় কারণ হচ্ছে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার ফলে অনেক কিছুরই সরবরাহ কমে গেছে, ঘাটতি তৈরি হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতিও আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে তৈরি পোশাক খাতও আছে।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সদ্য ঘোষিত মার্কিন শ্রমনীতি এবং তৈরি পোশাক খাতে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, উদ্যোক্তা এবং শ্রমিকদের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তাদের এই নীতির ফলে কাঁচামাল আমদানি ও পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হতে পারে। শিল্পের বিরুদ্ধে যেকোনো বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা কারখানা বন্ধ এবং নারী কর্মীদের চাকরি হারানোর দিকে ধাবিত করবে। এ ছাড়া এটি লিঙ্গ সমতার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য দেশের প্রচেষ্টাকে লাইনচ্যুত করবে। সমাজে চরমপন্থা ও উগ্রবাদের জন্ম দেবে।
তিনি বলেন, দেশে পোশাক খাতে শ্রমিকদের কাজের অবস্থা উন্নত হচ্ছে। ক্রেতা, বিক্রেতা, আমদানি ও রপ্তানিকারক দেশ, অঞ্চল ও অংশীদারদের সবার দায়িত্ব সমন্বিতভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা।
অনুষ্ঠানে তৈরি পোশাকের অবস্থা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইআইএসএসের গবেষক মাহাফুজ কবির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম।
গবেষণায় বলা হয়, দেশের ৫০ শতাংশ পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপের দেশগুলোতে, ১৮ শতাংশ আমেরিকাতে, ১১ শতাংশ ইউকেতে, ৫ শতাংশ কানাডা, ৩ শতাংশ জাপান, ২ শতাংশ ভারত ও ১০ শতাংশ বিশ্বের অন্যান্য দেশে। আর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ট্রাউজার ৩২ শতাংশ। এরপর আছে টি-শার্ট, আন্ডারগার্মেন্টস, শার্ট ও অন্যান্য পোশাক। তবে সেই তুলনায় পোশাকশ্রমিকদের মজুরি অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সবচেয়ে কম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, পোশাকশ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। পোশাক খাতের বিদ্যমান এবং আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ জন্য সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো ও অংশীজনের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে সেন্টার পর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তৈরি পোশাক খাতে বর্তমান ন্যূনতম মজুরি শালীন জীবনযাপনের জন্য যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে দেশের কর্মীদের উৎপাদনশীলতা কম। শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সক্ষম হতে হলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, রপ্তানির বৈচিত্র্যকরণ, বাণিজ্য ও পরিবহন সংযোগ এবং সরকার ও বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা বাড়াতে হবে।