জুলাই ঘোষণাপত্র ও আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এই ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিবে উঠবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিক্রিয়ায় এ তথ্য জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে এই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপক্ষে ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশন সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিএনপি এই নির্বাচনকে সফল করে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং একটি কার্যকরী জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।বিএনপির মহাসচিব বলনে, দীর্ঘ ১৬ বৎসর এই দেশের মানুষ এক ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, শহীদ, আহত, গুম হয়েছেন, গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তিনটি নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।
তিনি আরও বলনে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সকল নির্যাতন মূলক পন্থা বেছে নিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় করণ করেছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে সেই লক্ষে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছে। অর্থনীতিকে লুট-পাট, বিদেশে টাকা পাচার, ব্যাংক লুঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। শেয়ার বাজার লুঠ করেছিল, মাফিয়া তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। বিএনপি শুরু থেকেই এর বিরোধীতা করেছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, গুম, খুনের মধ্য দিয়ে সেই সংগ্রাম ও আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি’র ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় সাজা, নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মিথ্যা সাজানো মিথ্যা মামলায় ১০ বছর সাজা দিয়ে, ৬ বছর কারাগারে আটক করে রেখেছিল। ৫ আগস্ট মুক্তি পেয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ অনেক নেতাকে আজীবন কারাদণ্ড প্রদান করে বিরোধী নেতাদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, কারাগারেই অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপিকে নেতৃত্ব শুন্য করে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। নির্যাতিত, শারীরিকভাবে আঘাত প্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রতিটি নেতাকর্মী লড়াই করেছেন।তিনি আরও বলেন, বিএনপি এই ঘোষণা পত্রকে স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে এই ঘোষণা পত্রে রাজনৈতিক দল গুলো যে অংগীকার করেছে তা পালনের মধ্যদিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মানের প্রক্রিয়া।