চাঁদাবাজ-মাফিয়াদের সিস্টেমকে একটি রাজনৈতিক দল রক্ষা করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সেই দল চাঁদাবাজদের মদদ দেওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবস্থা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কয়েকদিন আগে বরগুনার ছেলে সোহাগকে পাথর মেরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বরগুনাবাসী কি এই ধরনের সিস্টেম দেখতে চায়? আপনারা কি পাথর মেরে হত্যার রাজনীতি দেখতে চান? আপনার সন্তানকে ঢাকা শহরে হত্যা করা হয়েছে আপনারা তার প্রতিবাদ করুন। এই হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে, সরকারের আইনশৃঙ্খলার চরম ব্যর্থতা এবং একটি দলের চাঁদাবাজদের মদদদানের কারণে আজ এ অবস্থা।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এবং ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রায় আজ বরগুনার এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি, একটি দল এক সময় পাকিস্তানপন্থীদের পুনর্বাসন করেছে। আজ গণঅভ্যুত্থানের পর আবার মুজিববাদীদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি—বাংলাদেশে মুজিববাদী ও চাঁদাবাজদের কোনো রাজনীতি হবে না। আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি বলেছি— আমরা বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করবো। বাংলাদেশে ভারতপন্থী বা পাকিস্তানপন্থী রাজনীতি আর চলবে না।
তিনি বলেন, গণহত্যার বিচার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমরা বলছি সংস্কার চাই। সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়। আমরা চাই উচ্চকক্ষ, দুদক ও নির্বাচন কমিশন হোক স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হোক। কোনো স্বৈরতন্ত্র আমরা বাংলাদেশে ফিরতে দেবো না, কাউকে নতুন করে স্বৈরাচার হতে দেবো না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরেও চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপির এ নেতা। তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম— চাঁদাবাজ-মাফিয়াদের যে সিস্টেম টিকিয়ে রাখে, সেই সিস্টেমের পতন চাই। কিন্তু আজ দেখছি, সেই সিস্টেমকে রক্ষা করছে একটি রাজনৈতিক দল। তারা চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বরগুনায় আমাদের যারা মৎস্যজীবী, মজুর, কৃষক – আমরা তাদেরই সন্তান। আজ আমরা এসেছি আপনাদের কাছে, সেই তরুণ প্রজন্ম হিসেবে যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিলাম।
নাহিদ বলেন, বিগত ১৬ বছর দেশে একটা ফ্যাসিস্ট সরকার রাজত্ব করেছে যে সরকার দুর্নীতি, মাফিয়াতন্ত্র, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। সেই অপকর্ম থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে দেশের ছাত্র ও তরুণরা রাজপথে নেমেছিলো। বরগুনার ১০ জন মানুষ প্রাণ দিয়েছে, তারা জাতীয় বীর। আমরা তাদের ও আহতদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
এদিন বিকালে বরগুনা টাউনহল থেকে প্রেসক্লাব চত্বর পর্যন্ত পদযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়। শহরজুড়ে এ উপলক্ষে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।