ট্রাম্পের কাছে নাস্তানাবুদ নরেন্দ্র মোদী, হতাশ গদি মিডিয়া ও হাসিনা গং। সংবাদসম্মেলনে ট্রাম্পের প্রশংসা আর স্তুতি গাওয়া ছাড়া তেমন কিছু বলতে শুনা যায় নি তাকে। এমনকি ট্রাম্প বাংলাদেশ প্রসঙ্গে উত্তর দিতে বললেও মোদী শুরু করেন রাশিয়া-ইউক্রেন প্রসঙ্গ দিয়ে। এক্ষেত্রে ট্রাম্প তার স্বভাবজাত কৌশলে বৈঠকের আগেই মোদীকে বড়সড় পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রাখেন। সংবাদসম্মেলনেও বিধ্বস্ত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, প্রিয় বন্ধু ট্রাম্প যখন কথা বলছিলেন মোদীকে তেমন হাসিমুখে দেখা যায় নি। মোদীর চোখে-মুখে ছিল রাজ্যের হতাশা আর ঘন মেঘের কালো ছায়া।
এর আগে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় এমন ছবি দেখা যায় নি, ছিলেন প্রাণোচ্ছল। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ‘‘পাল্টা শুল্ক’’ আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘আজকেরটি সবচেয়ে বড়: পাল্টা শুল্ক!!!’’ এর আগে নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘চোখের বদলে চোখ, শুল্কের বদলে শুল্ক। একেবারে সঠিক পরিমাণ।’’
এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ব্যাখ্যা করে বলা হয়, উদাহরণ হিসেবে ভারত যদি মার্কিন অটোসামগ্রীতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তাহলে ভারত থেকে অটো আমদানিতেও ওয়াশিংটনের ২৫ শতাংশ শুল্ক থাকবে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরও সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন শেখ হাসিনা ও তার মিত্রদেশ ভারত। তবে সেই বিষয়টি এবার পরিষ্কার করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ডিসিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ট্রম্পে। পরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন দুই নেতা।
যার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বাংলাদেশ পরিস্থিতি সম্পর্কিত প্রশ্নও ছিল। এসময় বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকান ডিপ স্টেটের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়ে আপনার অভিমত কী? কারণ, এটা স্পষ্ট যে বাইডেন প্রশাসনের আমলে মার্কিন ডিপ স্টেট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এমনকি, মুহাম্মদ ইউনূসও জুনিয়র সরোসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। বাংলাদেশের বিষয়টি নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি?’জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না।
এটা এমন একটি বিষয় যেটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং সত্য বলতে, শত শত বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। বাংলাদেশের বিষয়টি উত্তর দিতে, আমি এটা প্রধানমন্ত্রীর র হাতে ছেড়ে দিচ্ছি।’ অপরদিকে, মোদি আমেরিকায় থাকতেই অবৈধ ভারতীয়দের ফেরত পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। নিবার দ্বিতীয় দফায় পাঠানো হবে ভারতীয়দের একাংশকে। এ বিষয়ে ভারতের বেসামরিক বিমান সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই বার্তায় বলা হয়েছে, অবৈধ ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে দুটি বিশেষ বিমান সপ্তাহের শেষদিকে আমেরিকা থেকে পাঞ্জাবের অমৃতসারে নামবে, প্রথমটি ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয়টি ১৬ ফেব্রুয়ারি।