ভারতের মণিপুর রাজ্যে নতুন করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার, রাজ্যের জিরিবাম জেলায় সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। বিষ্ণুপুর জেলায় সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে শুক্রবার রকেট হামলায় আরও একজন নিহত হন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, সহিংসতার এই ঘটনা দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের কারণে ঘটে। একদল অস্ত্রধারী প্রথমে অপর দলের ঘুমন্ত সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা করে। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির সময় আরও ৪ জন প্রাণ হারান।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অস্ত্রধারীরা জেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের একটি বিচ্ছিন্ন স্থানে এককভাবে বসবাসকারী ব্যক্তির বাড়িতে প্রবেশ করে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর, জেলার সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়, যার ফলে এক গোষ্ঠীর তিনজনসহ মোট চারজন নিহত হন।
এছাড়া, বিষ্ণুপুর জেলায় সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে শুক্রবার সকালে রকেট হামলায় ১ জন নিহত হন। সন্ত্রাসীরা ইম্প্রোভাইজড রকেট ব্যবহার করে ত্রংলাওবিতে ভোর ৪:৩০টার দিকে হামলা চালায়, যা দুটি স্থাপনা ধ্বংস করে দেয়।
মণিপুরে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সহিংসতা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে, মণিপুরের ইমফলের পশ্চিমে কয়েকটি গ্রামে ড্রোন ব্যবহার করে বোমা ফেলার ফলে দুজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এসব সহিংসতার তীব্র নিন্দা করে এগুলোকে ‘সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ‘মণিপুর রাজ্য সরকার এ ধরনের অপ্ররোচিত হামলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং আদিবাসী জনগণের বিরুদ্ধে এই সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
মণিপুরে চলমান সহিংসতার প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষা বিভাগ আজ থেকে (৭ সেপ্টেম্বর) সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। নাগরিক সমাজ সংস্থা কোঅর্ডিনেশন কমিটি অন মণিপুর ইনটিগ্রিটি জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘জন জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। তারা ‘কুকি জঙ্গিদের নিরবচ্ছিন্ন আক্রমণের’ প্রেক্ষিতে সবাইকে নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে।