অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন যে, তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে চলমান অমীমাংসা সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবে। তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় কোন পক্ষেরই সুবিধা হচ্ছে না।
ঢাকায় নিজ সরকারি বাসভবনে পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানিবণ্টনের বিষয়টি সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মতো নদীমাতৃক দেশগুলোর অধিকার রক্ষার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তি হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষাৎকারটি পিটিআই নিউজের ওয়েবসাইটে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, “পানির পরিমাণ নিয়ে যদি আমি জানি, তাহলে এটি সমস্যা কমাতে সহায়তা করবে। এমনকি যদি আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট না-ও হই, তাতেও বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত।” তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টি সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে শিগগিরই চাপ প্রয়োগ করবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে, ড. ইউনূস বলেন, নতুন সরকার এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “চাপ প্রয়োগের কথা বলা বড় ব্যাপার। আমি তা বলছি না। আমরা আলোচনা করব এবং সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে বসতে হবে।”
২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকায় সফরের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুক্তির অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানান, যার ফলে চুক্তিটি কার্যকর হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন যে তার রাজ্যে পানির সংকট রয়েছে।
ড. ইউনূস সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, “এটি নতুন কিছু নয়, বরং একটি পুরোনো সমস্যা। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আমরা চুক্তি চূড়ান্ত করতে চেয়েছিলাম এবং ভারত সরকারও প্রস্তুত ছিল, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার প্রস্তুত ছিল না। এই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মতো নদীমাতৃক দেশের নির্দিষ্ট অধিকার রক্ষার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনে এ বিষয়ে একটি সমাধান খুঁজতে হবে। ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে এবং আমরা সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি করছি।”