সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে ৪৬ জন নিহত হওয়ার এবং পরে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২১ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি ৫ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ হিসেবে দায়ের করেন।
এই অভিযোগটি আশুলিয়ায় নিহত মানারাত ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহর বোন সাইয়েদা আক্তারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে। পূর্বে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঢাকায় সাতটি এবং চট্টগ্রামে একটি গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে এসব মামলার তদন্ত চলমান। বৃহস্পতিবার দায়ের করা নতুন অভিযোগসহ, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মোট ৯টি অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে শেখ হাসিনার পাশাপাশি যাদের নাম এসেছে তারা হলেন: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, সাভার-আশুলিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, এবং আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। এছাড়া, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত এসপি মোবাশ্বিরা জাহান, সাবেক এসপি আব্দুল্লাহহিল কাফি, এবং ঢাকা জেলা উত্তরের সাবেক ডিবি পরিদর্শক আরাফাত হোসেনও অভিযোগের আওতায় আছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আশুলিয়া থানার বিভিন্ন পুলিশ সদস্যদের মধ্যে, ওসি (তদন্ত) নির্মল চন্দ্র, ওসি এএফএম সায়েদ আহমেদ, এসআই আফজালুল, এসআই জলিল, এসআই মো. রাকিবুল, এসআই আবুল হাসান, এসআই হামিদুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন, এসআই আব্দুল মালেক, এএসআই সুমন চন্দ্র গাইন, এএসআই বিশ্বজিৎ রায়, কনস্টেবল মুকুল, এবং কনস্টেবল রেজাউল করিমের নাম রয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইলে ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে নির্দয়ভাবে গুলি চালানো হয়। এতে মানারাত ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আহনাফসহ ৪৬ জন নিহত হন। এরপর, নিহতদের লাশ অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা ময়লার বস্তার মতো করে ভ্যানে তোলেন এবং পুলিশের গাড়িতে তুলে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেন। এইভাবে গণহত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।