বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে জিম্মি করা সোমালি জলদস্যুদের আচরণে পরিবর্তন এসেছে। নাবিকদের সঙ্গে শুরুর দিকে কঠোর আচরণ করলেও এখন তারা কিছুটা নমনীয়। নাবিকদের সঙ্গে আর দুর্ব্যবহার করছে না তারা। নাবিকদের নিজ নিজ কেবিনে থাকতে দিচ্ছে। তাদের খাবার ও পানি নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিল কেটে গেছে। উপকূল থেকে খাবার আনছে জলদস্যুরা। সোমালিয়ার ছাগল দিয়ে তেহারি বানিয়ে খাচ্ছে একত্রে। জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে মুক্তিপণের আলোচনা ফলপ্রসূভাবে চলতে থাকায় জলদস্যুদের আচরণে এমন পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করছেন নৌ খাতের অভিজ্ঞজনরা।
এর আগে জলদস্যুরা একই মালিকের এমভি জাহান মণি নামের আরেকটি জাহাজ জিম্মি করেছিল ১৩ বছর আগে। তখনও মুক্তিপণের আলোচনা শুরু হওয়ার পর জলদস্যুরা ভালো আচরণ করেছিল জিম্মিদের সঙ্গে। জাহান মণি জাহাজে জিম্মি হওয়া নাবিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘মুক্তিপণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে থাকলে ফুরফুরে মেজাজে থাকে জলদস্যুরা। তখন তাদের আচরণেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। আমরা ৯৯ দিন পর মুক্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ দিকে আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে তারা। এখনও তাই ঘটছে এমভি আবদুল্লাহর সঙ্গে।’
গত ১২ মার্চ জাহাজটি সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। তখন সেটিতে ২৫ দিনের খাবার ও পানি মজুত ছিল। এর পর থেকে সেই খাবার ও পানিতে ভাগ বসিয়েছে জলদস্যুরা। শিগগির খাবার ও পানির মজুত শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন নাবিকরা। তবে এগুলো ফুরিয়ে গেলে কী হবে– তা নিয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে আলাপ করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ। জলদস্যুরা আশ্বাস দিয়েছে, খাবার ও পানির কোনো সংকট হবে না জাহাজে। প্রয়োজন মতো এটির ব্যবস্থা করবে তারা।
জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষের মুখপাত্র ও কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘নাবিকদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। জিম্মি থাকলেও নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন। এখন জাহাজে যে খাবার ও পানি আছে তা একসময় শেষ হয়ে গেলেও উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। জলদস্যুরা উপকূল থেকে এনে প্রয়োজন মেটাবে বলে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’