গাজীপুর কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের ঘটনায় দুই শিশুসহ আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে আগুনের ঘটনায় ১০ জন মারা গেলেন।
আজ সোমবার ভোরে সোলাইমান (১০) ও গোলাম রাব্বি (১১) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মারা যান। আজ রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মারা যান জহিরুল ইসলাম কুটি (৩২) ও রাত ৩টার দিকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে মারা যান মোতালেব হোসেন (৪৮)। এ নিয়ে আগুনের ঘটনায় ১০ জন মারা গেলেন।
এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে মারা যান নার্গিস খাতুন (২২)। একই দিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আরিফুল ইসলাম ও সকাল পৌনে ৭টার দিকে মহিদুল নামে দু’জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া শনিবার সকালে মনসুর আলী, শুক্রবার সকালে সোলাইমান মোল্লা ও সন্ধ্যার দিকে শিশু তায়েবা মারা যায়।
মৃত জহিরুলের ভাতিজা মো. বাবু হোসেন বলেন, তাঁদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার ভেড়াখোলা গ্রামে। বর্তমানে স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে গাজীপুর কালিয়াকৈরে ভাড়া থাকতেন। সেখানে মাছের ব্যবসা করতেন। জহিরুলের বাবার নাম আয়নাল ফকির।
এদিকে মোতালেব হোসেনের মেয়ে মনিরা খাতুন বলেন, তাঁদের বাসা টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার ইদুলপুর গ্রামে। তাঁর বাবা–মা কালিয়াকৈরে ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় তাঁর মা রমিছা বেগমও (৩৮) দগ্ধ হয়েছেন। তাঁর শরীরের তিন শতাংশ পুড়েছে। তিনি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন।
মৃত সোলাইমানের মামা মো. সোহাগ বলেন, তাঁদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার বালুকজান গ্রামে। বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। বাবা-মায়ের সঙ্গে কালিয়াকৈরে ভাড়া থাকত। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ত সে। এই ঘটনায় পরিবারের সবাই সুস্থ থাকলেও গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হওয়ার পর সেটি দেখতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছিল সোলাইমান।
মৃত গোলাম রাব্বির বাবা শাহ আলম বলেন, তাঁদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার তারটিয়া গ্রামে। পরিবার নিয়ে গত ৮ বছর ধরে গাজীপুরে থাকেন তিনি। সেখানে ফেরি করে আইসক্রিম বিক্রি করেন। গত পাঁচ বছর আগে রাব্বির মা নাজমা বেগম অসুস্থ হয়ে মারা যান। রাব্বি নাটোর ক্যান্টনমেন্টে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। বাবার কাছে বেড়াতে এসেছিল রাব্বি। আসার পর সেখানে আগুনে দগ্ধ হয়।
গত ১৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কালিয়াকৈরের কোনাবাড়ির তেলিরচালা টপস্টার এলাকায় গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী শিশুসহ ৩৬ জন দগ্ধ হন। দগ্ধদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। দগ্ধ সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাদের প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে বলে জানান স্থাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।