গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে উঠলো মাত্র চার মিনিটের ঝড়। তাতেই লন্ডভন্ড আকাশী শিবির। ফেডারেশন কাপের গ্রুপসেরা নির্ধারণী ম্যাচে চিরবৈরী আবাহনীকে ২-১ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান। বহুদিন পর টানা দুই ম্যাচে সাদা-কালোরা হারালো আকাশীদের। এবং দুটি জয়ই এসেছে ফেড কাপের মঞ্চে।
২০১৯ সালের ১৭ জুলাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মোহামেডান ৪-০ গোলে হারিয়েছিল আবাহনীকে। এরপর একবারই আবাহনীকে হারাতে পারে মোহামেডান। সেটা গত বছর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে। তবে তা ৪-৪ অমিমাংসীত থাকার পর মোহামেডান জিতেছিল টাইব্রেকারে। সেই হিসেব করলে ১৬৭৩ দিন পর ফের আবাহনীকে নির্ধারিত সময়ে হারানোর স্বাদ পেলো মোহামেডান।
সাড়ে আট মাস আগে কুমিল্লায় বাংলা ক্লাসিকো টাইব্রেকারে জিতে ফেড শিরোপা ঘরে তুলতে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল মালির ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে। মোহামেডান অধিনায়ক একাই করেছিলেন চার গোল। আজ জ্বরের কারণে দর্শক হয়েছিলেন দিয়াবাতে।
বাইরে থেকেই দলকে ৩৮ মিনিটে পিছিয়ে যেতে দেখেছেন। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়াশিংটন ব্রান্দাওয়ের অসাধারণ সেট-আপে গোল করেন সেন্ট ভিনসেন্ট স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস। হাসান মুরাদের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে বাঁ দিক থেকে এগিয়ে গিয়ে আড়াআড়ি পাস বাড়ান ওয়াশিংটন। সেটা ধরে মোহামেডান কিপার সাকিব আল হাসানের পাস দিয়ে বল জালে জড়ান কর্নেলিয়াস। এগিয়ে থাকার তৃপ্তি নিয়ে বিরতিতে যাওয়া আবাহনীকে ফিরেই অবশ্য পড়তে হয় ঝড়ের কবলে। ৫১ মিনিটে উজবেক প্লে-মেকার মোজাফফরভের থ্রু ধরে আবাহনীর অরক্ষিত রক্ষণের সুবিধা নিয়ে পাপ্পু হোসেনকে পরাস্ত করেন মোহামেডানের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ইম্যানুয়েল সানডে। এর চার মিনিট পর সানডেই করেন জয়সূচক গোল। তবে তার আগে হাসান মুরাদের লম্বা থ্রো-ইনে আইভরিয়ান ডিফেন্ডার দোসো সিদির ব্যাক হেড জালে দিকেই যাচ্ছিল। আলতো টোকায় গোলটা নিজের করে নেন সানডে।
চার মিনিটের ঝরে পিছিয়ে পড়া আবাহনী অবশ্য এরপর আর ফিরে আসার মতো খেলতে পারেনি। দলটির আর্জেন্টাইন কোচ দিয়েগো ক্রুসিয়ানিরও এক্ষেত্রে দায় আছে। অভিজ্ঞ কোচ একাদশে পরিবর্তন এনেছেন বড্ড দেরীতে। নাবিব নেওয়াজ জীবন ও রবিউল হাসানকে মাঠে পাঠিয়ে আক্রমণের শক্তি যখন বাড়ালেন তখন আর পাঁচ মিনিট খেলা বাকি। অথচ প্রতিপক্ষের ডাগআউটের রাজা আলফাজের দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগে জোড়া বদলেই বদলে গিয়েছিল মোহামেডানের মনোভাব। দুই উইঙ্গয়ে তিনি মাঠে পাঠান পরীক্ষিত জাফর ইকবাল ও শাহরিয়ার ইমনকে। দ্রুতগতির দুই উইঙ্গার নেমে উল্টো আক্রমণের ধার বাড়িয়ে আবাহনীর পরিকল্পনা দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে দারুণ এক জয় আদায় করে নিয়েছে মোহামেডান।
এই জয়ে গ্রুপসেরা হওয়ার সুবিধেটা পাচ্ছে তারা। কোয়ার্টার ফাইনালের লাইন-আপ নিশ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে এই জয় এগিয়ে রাখবে মোহামেডানকে।