প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তাতে তিনি বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ এবং অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদারে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এদিকে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে ওয়াশিংটন ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।
সংস্থার কো- চেয়ার ও ট্রাস্টি মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস তার শুভেচ্ছাপত্রে নতুন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শুভকামনা জ্ঞাপন করেন। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তার চিঠিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেন- আপনি একটি ঐতিহাসিক পঞ্চম মেয়াদে যাত্রা শুরু করায় এবং সামপ্রতিক বছরগুলোতে আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় উন্নয়ন লাভের প্রতিফলন ঘটায়- আমি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে এবং এলডিসি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের প্রতি আমার সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমাদের অংশীদারিত্ব দুই দেশের জনগণের মধ্যকার বন্ধুত্বের শক্তিশালী বন্ধনের এক গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্কের শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমি আশা করি, অধিকার ও স্বাধীনতার অগ্রগতির পাশাপাশি রাজনৈতিক জীবনে সমঝোতার পরিবেশে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারবে।
তিনি বলেন, এই মূল্যবোধগুলো কমনওয়েলথ পরিবারের মূলভিত্তি এবং এগুলো প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরি করে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করে। ঋষি সুনাক বলেন, আমি অভিবাসনের বিষয়ে সহযোগিতাকে আমাদের দ্বিপক্ষীয় এজেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখছি। আপনি বৃটেনে থাকা অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত নেয়ার জন্য সদয়ভাবে একটি টেকসই ও সুবিন্যস্ত পথকে সমর্থন করেছেন।
আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার বৃহত্তর এজেন্ডার অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা চূড়ান্ত হওয়ার প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে এবং বিকাশকে অব্যাহত রাখতে আমি আপনার সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অভিনন্দন: এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে পাঠানো বার্তায় বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার ও ট্রাস্টি মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস লিখেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বকে কতোটা মূল্যায়ন করি, তা প্রকাশে আমি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সবার সঙ্গে যোগ দিয়েছি। আমরা এসডিজি ও সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর ব্যাপারে সমর্থন অব্যাহত রাখার আশা করছি।
বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উদাহরণ হতে পারে এমন আশা করে তিনি বলেন, দূরদর্শী ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগসহ প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যগুলোর জন্য চলমান সহায়তা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মেলিন্ডা গেটস বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল আর্থিক ইকোসিস্টেম বিকাশে এটুআই ও আইসিটির সঙ্গে আমাদের ফাউন্ডেশনের অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা ২০৪১ সালে আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনে অবদান রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সহযোগিতা করছি।
সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমাদের ফাউন্ডেশন শামিল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মুখে ধানের প্রজনন আধুনিকায়ন ও উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গেও আমরা কাজ করছি। বার্তায় পুষ্টি বিষয়ে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা সফলভাবে সম্পন্ন করা এবং জাতীয় খাদ্য ও নিরাপত্তা নীতি ২০২০-৩০ পাস করায় শেখ হাসিনা সরকারকে অভিনন্দন জানান মেলিন্ডা গেটস। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ফাউন্ডেশনের পুষ্টি দল বৃহৎ আকারের খাদ্য মজুতকরণের মাধ্যমে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি দূর করার দিকে মনোনিবেশ করছে।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা আরও বাড়বে এমনটা আশা করে মেলিন্ডা গেটস বলেন, ডিপিএইচই ও এটুআইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশে একটি স্যানিটেশন ডেটা কমান্ড সেন্টার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি আমরা, যা হবে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম।