তিন বছর আগে সামরিক অভ্যুত্থানের পর জারি করা জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে আজ বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে নিবন্ধন সহজ করার ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন চ্যানেল নিউজ এশিয়া। এতে বলা হয়, সামরিক জান্তা নির্বাচন সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক শাসনে ফিরতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা বলেছে, দলীয় সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ন্যূনতম যে সমস্যা ছিল তা কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে শতাংশ হিসেবে শহর কমানো হয়েছে, যেখানে কাজ করতে হবে একজনকে। তবে কেন এই নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে সে সম্পর্কে পরিষ্কার করা হয়নি। নির্বাচন কবে হবে তারও কোনো সময়সীমা ঘোষণা করেনি জেনারেলরা। তারা গত বছর নিবন্ধিত হতে ব্যর্থতার কারণে কমপক্ষে ৪০টি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে আছে অং সান সুচির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। প্রথমে দেশটিতে ৬ মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল।
তা বার বার বর্ধিত করা হয়েছে। সর্বশেষ জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা আজ বুধবার।
কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা কেড়ে নেয় জেনারেল মিন অং হ্লাইং। এ ঘটনা ঘটে দেশটিতে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের অল্প পরেই। ওই নির্বাচনে ব্যাপক ভূমিধস বিজয় পায় অং সান সুচির দল এনএলডি। তবে এলএলডির দাবি ওই নির্বাচন ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু। তাদের পরিকল্পনা ছিল সংবিধান সংশোধনের। তাতে রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা কমানো এবং দেশকে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা ছিল।
১৯৬২ সালে বৃটিশ ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্ত হওয়ার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পড়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। সেখানে গণতন্ত্রপন্থি যুব শ্রেণি তীব্র বিরোধিতায় জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলেছে। তারা যোগ দিয়েছে বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহীদের সঙ্গে। এই গ্রুপগুলোর সামনে দাঁড়াতে পারছে না জান্তা সরকারের সেনাবাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে সেনারা আকাশ ও স্থলপথে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাতেও কোনো কাজে আসছে না। একের পর এক এলাকা বিরোধীদের হাতে হারাচ্ছে তারা।