ভারত সরকারের ক্ষমতার জোরে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন একটি ভারতীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। যা স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বার্থ ও মর্যাদার পরিপন্থী।
আজ সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়—ভারতের সহযোগিতায় বিনা ভোটে তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতা আবারও দখল করেছে। ভারতের প্রতিভূ হয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এক সর্বনাশা কতৃর্পক্ষে পরিণত হয়েছেন। জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্রের দৌরাত্মে এক উদ্ভট, দৃষ্টান্তহীন এবং নিষ্ঠুর খামখেয়ালী রাজার মতো ভারতকে খুশি করতেই ব্যস্ত রয়েছেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের আওতার মধ্যে ক্রমাগতভাবে ঠেলে দিচ্ছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা—সার্বভৌমত্ব দুর্বল করে একটি ডামি রাষ্ট্র বানানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা কার্যকর করছেন তিনি। বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য তারা পুরো দেশটাকেই ডামি রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের কথায় স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়। ক্ষমতার উৎস ভারত।
রেলওয়ের ঢিলেঢালা নিরাপত্তায় বেপরোয়া পকেটমাররেলওয়ের ঢিলেঢালা নিরাপত্তায় বেপরোয়া পকেটমার
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের জনগণের ভোটের আশা করে না এবং বাংলাদেশের জনগণের ভোটের প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস নেই। ভারত সরকারের ক্ষমতার জোরে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে। আওয়ামী লীগ এখন একটি ভারতীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, লালমনিরহাটের আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশি রাফিউল ইসলাম টুকলুকে রবিবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মাত্র ছয় দিন পূর্বে গত ২২ জানুয়ারি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দিনকে বিনা উসকানিতে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এই হত্যার পর বিএসএফের পক্ষ থেকে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় তা অভিসন্ধিপ্রসূত, নির্জলা মিথ্যাচার। কিন্তু আওয়ামী ডামি সরকার সীমান্তে অব্যাহত এই নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে এই অবধি প্রতিবাদ তো দূরের কথা, টুঁ শব্দ পর্যন্ত করার সাহস দেখাতে পারেনি।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি স্থগিতআওয়ামী লীগের কর্মসূচি স্থগিত
সারা দেশে ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশ কর্তৃক হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, গত ৩ দিনে সারা দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ১২ জনের অধিক নেতাকর্মী। মোট ২টি মামলায় আসামি ১২৩ জনের অধিক নেতাকর্মী। গত বছরের ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর অদ্যাবধি গ্রেপ্তার ১৩৫৩০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট ৫১৩টি মামলায় আসামি ৫৩৩২৫ জনের অধিক নেতাকমী, মোট আহত ২০৮২ জনের অধিক নেতাকর্মী এবং মোট মৃত্যু ১৭ জন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম ও ওলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম।