বিগত আন্দোলনের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন কৌশলে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, জনবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহতের প্রতিবাদে’ এক গণবিক্ষোভপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি। সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু করে বিজয়নগর পানিরট্যাংকির মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, এই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে প্রশাসন, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী সর্বমহলে ভারতীয় এজেন্ট রয়েছে। এদেশে সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামী লীগকেও বর্জন করুন, রাজপথে নামুন। ১০ ডিসেম্বর, ২৮ জুলাই, ২৮ অক্টোবরের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন কৌশলে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গণতন্ত্রের বিজয় অনিবার্য। আমরাই জয়ী হবো।
তিনি বলেন, দেশে একসঙ্গে দুটো সংসদ রয়েছে। এই অবৈধ সংসদের অধিবেশন ডাকা হলে আমরা সংসদ অভিমুখে কর্মসূচি দিবো। জনগণের গণআন্দোলনেই সরকারের পতন হবে, ইনশাআল্লাহ।
নুর বলেন, প্রতি মাসে সীমান্তে ৫/৭ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়।
সীমান্ত হত্যা বন্ধে আমাদের কেনো রাজপথে দাঁড়াতে হবে, এটা তো রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা দেয়া, সীমান্তে বিজিবির সদস্যদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে বিজিবি হত্যাকে কিভাবে একজন মন্ত্রী বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে। ২০০১ সালেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ী সীমান্তে বিজিবি তৎকালীন বিডিআর যখন বিএসএফকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছিলো, ১৬ জন বিএসএফ নিহত হয়েছিলো। তখন বিডিআরের মহাপরিচালককে সরিয়ে দেয়া হয়েছিলো। অর্থাৎ সীমান্তে ভারত দখল, হত্যাযজ্ঞ চালালেও আমরা কিচ্ছু বলতে পারবো না। এই হচ্ছে ভারতীয় তাবেদার সরকারের নতজানু নীতি। ক্ষমতার জন্য এরা ভারতের গোলামি করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিষ্কার কথা, আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতের গোলামি করলেও এদেশের মানুষ ভারতের গোলামি করবে না। ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের কোন দ্বন্দ্ব নাই। তবে আমাদের আপত্তি ভারতের শাসকদের পলিসি ও নীতি নিয়ে। তাই দলমত নির্বিশেষে ভারতীয় এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষা করতে হবে। তাই ভারতীয় আধিপত্য হঠাতে আমরা ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছি। আপনারা কেউ ভারতীয় পণ্য কিনবেন না। এদেশে কোন ভারতীয় রেস্টুরেন্ট, শো-রুমে ঢুকবেন না। ভারতীয় পণ্যের বিকল্প আমাদের তৈরি করতে হবে, উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে স্বাবলম্বী করতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে ভারতের কাছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়েছে।
যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলামের সঞ্চালায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মশিউর রহমান, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট খালিদ হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মুরশেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, সহ সভাপতি ফয়সাল, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।