ইসলামাবাদে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের পাকিস্তান শাসিত কাশ্মির সফরে বিরক্ত ভারত। এই সফরকে দেশটির আঞ্চলিক অখণ্ডতার ক্ষেত্রে ‘মেনে নেয়া যায় না’ বলে অভিহিত করেছে ভারত।
পাকিস্তানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত জেন ম্যারিয়ট গত ১০ জানুয়ারি আজাদ কাশ্মিরের মিরপুর সফর করেন এবং ব্যবসায়ী, স্থানীয় কমিউনিটির সদস্য এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ম্যারিয়ট ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তার আজাদ কাশ্মিরে সফরকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে ভারত।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতায় এ ধরনের নিয়ম ভঙ্গ করাকে কোনোদিন মেনে নেয়া যায় না।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা ভারতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালেক্স এলিসের কাছে এই নিয়ম ভঙ্গের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মির এবং লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো সর্বদা ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এবং থাকবে।
ম্যারিয়ট ২০২৩ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তানে প্রথম নারী ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হয়েছিলেন, এক্স-এ এই সফর সম্পর্কে পোস্ট করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তানের জনগণের হৃদয়ের মিরপুর থেকে সালাম! ৭০ শতাংশ ব্রিটিশ পাকিস্তানির শিকড় মিরপুর থেকে এসেছে, যা প্রবাসীদের স্বার্থের জন্য আমাদের একসাথে কাজকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। আপনার আতিথেয়তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!
ইসলামাবাদে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন এক্স-এর একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও পোস্ট করেছে, যেখানে ম্যারিয়টকে মিরপুরের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে এবং রাস্তার শিশুদের ফুটবল দলের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে। ভিডিওতে তাকে মিরপুর জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় চেম্বার অব কমার্সের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে।
মিরপুরে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ রয়েছে যাদের ব্রিটিশ ও পাকিস্তানের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। ব্রিটিশ পাকিস্তানিদের রেমিটেন্স মিরপুরের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে এবং ব্রিটিশ নাগরিকরা ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা হিসেবে এই অঞ্চলে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে।
গত বছরের অক্টোবরে পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড ব্লোম পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরের গিলগিট-বালতিস্তান সফরের পর ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। সে সময় ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল নয়াদিল্লি।
২০২২ সালের অক্টোবরে ব্লোম যখন আজাদ কাশ্মিরে আরেকটি সফর করেন এবং বারবার এই অঞ্চলকে ‘আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে)’ বলে উল্লেখ করেন, তখন ভারতও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিবাদ জানায়।
২০২২ সালের এপ্রিলে মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমরের আজাদ কাশ্মির সফরকে ‘নিন্দনীয়’ বলে সমালোচনা করেছিল ভারত। ভারত ওমরের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পাকিস্তান শাসিত অঞ্চলে ভ্রমণ করে ভারতের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিল। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস