বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে টানা ৪র্থ বারের মতো জয়লাভ করেছে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। এবারের বিজয়ের মাধ্যমে তারা পঞ্চমবারের মতো করেছে সরকার গঠন। যদিও ইতোমধ্যেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর নির্বাচন নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও।
এ ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভল্কার তুর্ক। এবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) এইচআরডব্লিউয়ের ২০২৪ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাৎসরিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট প্রক্রিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না এমন ধারণা থেকেই দেশটির প্রধান বিরোধীদল বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে) নির্বাচনে আসেনি। যা নির্বাচন ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউর ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলী তার এক বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক অংশীদারদের পরিষ্কার বলে দিতে হবে, নির্বাচনী হয়রানি চলতে থাকলে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম আর চালাবে না। তাদের উচিত গণগ্রেপ্তার এবং বিরোধীদের ওপর দমন পীড়নের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো।
তিনি আরও বলেন, ভিন্ন রাজনৈতিক মত ও ঘুষ না দেওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক নিহত ও নিখোঁজের ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
বাংলাদেশি মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ২০০৯ সাল থেকে ৬০০টির বেশি গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে এবং প্রায় ১০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র র্যাবকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসার পর গুম হওয়ার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে দেখা যায়।
৭৪০ পৃষ্ঠার ২০২৪ বিশ্ব প্রতিবেদনের ৩৪ তম সংস্করণে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ১০০ টিরও বেশি দেশে মানবাধিকার চর্চা পর্যালোচনা করেছে।
এর আগে নির্বাচনের একদিন পর ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশিদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে আছে বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে এসেছিল, এটি নষ্ট হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এবং আমি আন্তরিকভাবে আশা করি এটি রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও বিস্তার করবে। সকল বাংলাদেশিদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে।
এদিকে প্রতিবেদনটির সূচনা প্রবন্ধে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসান, জানান ২০২৩ সালে শুধু মানবাধিকার দমন এবং যুদ্ধকালীন নৃশংসতার জন্যই নয় বরং নির্বাচনকালীন সরকারি ক্ষোভ এবং অনৈতিক লেনদেনের জন্যেও উল্লেখযোগ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিরোধী দল বিএনপির ৮ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাছাড়া, গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজিরের আগে বেআইনিভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক আটক রাখার বিষয়েও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০২৩ ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের পাশাপাশি সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত করে তোলার বিষয়েও শঙ্কা প্রকাশ করা হয় এইচআরডব্লিউয়ের প্রতিবেদন।
এর আগে নির্বাচনের একদিন পর ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশিদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে আছে বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে এসেছিল, এটি নষ্ট হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এবং আমি আন্তরিকভাবে আশা করি এটি রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও বিস্তার করবে। সকল বাংলাদেশিদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে।