আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও ফরিদপুর-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতাও রাখে না বলে মন্তব্য করেছেন মাদারীপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার নিলখী এলাকায় নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
এদিন তিনি নিলখী ও শিরুয়াইল ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে জনসংযোগ, পথসভা ও জনসভায় অংশ নিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময়ে মাদারীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, শিবচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, শিবচরের যে সুনাম এটা অনেক কষ্টে আমরা অর্জন করেছি যেটা গতকালকে (কালকিনির জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শিবচরকে চীফ হুইপ স্বর্গ রাজ্য বানিয়েছেন বলে প্রশংসা করেন) প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি আমার পার্শ্ববর্তী এক থানার একজন কথায় কথায় শিবচর নিয়ে কথা বলে। আমাদেরকে নিয়ে সমালোচনা করে। বলে- শিবচরের সব মস্তান, শিবচরে এটা হয় না, ওটা হয়না। আমি মনে করি এইটার একটা প্রতিবাদ আমার করার দরকার। কারণ, শিবচরের যেই অর্জন সেটা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত স্বীকার করেছে, যেখানে বিরোধী দলের নেতারা স্বীকার করেছে কিন্তু অন্য কেউ আমাদের এই সুনাম ধ্বংস করবে, আমাদের বদনাম করবে এটার পেছনে একটা চক্রান্ত আছে।
তিনি বলেন, আপনি (কাজী জাফর উল্যাহ) দুই বার ফেল করছেন। সামনে ৩ বার না ৪ বার ফেল করবেন এইটা আমার দেখার ব্যাপার না। আপনি কয়বার ফেল করবেন এটা আপনার ব্যাপার। ২ বার ফেল করার পরও আপনাকে অনেক বড় চেয়ারে দিয়েছে। আপনার জায়গায় আমি থাকলে আমি এই পোস্ট নিতাম না। বলতাম আমি নিজে নির্বাচিত হতে পারি না। আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েন না। সারাদেশকে নিয়ে নির্বাচনে এই ঝুঁকি আমি নিতে পারি না। শিবচরের নেতৃত্ব নিয়ে আপনি কথা বলেন। শিবচর থেকে এর আগেও পীর দুদু মিয়া, বাদশা মিয়া, অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনসহ অনেকেই ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে এমপি, এমএলএ হয়েছেন। এখনো ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে শিবচরের মানুষ নেতৃত্ব দেয়। শিবচরের মানুষ পারে।
কাজী জাফর উল্যাহ শিবচরের ইউপি চেয়ারম্যানের মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতাও রাখে না দাবি করে চিফ হুইপ বলেন, আপনার ভাগ্য ভালো আপনি ওইখানে নমিনেশন পেয়েছেন। শিবচরে হলে আপনি ইউপি চেয়ারম্যানের মনোনয়নও পেতেন না। আমাদের কাছে মনোনয়ন চাইলে আমরা আপনাকে চেয়ারম্যানের মনোনয়নও দিতাম না। এই যোগ্যতাও আপনার নেই।
নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান আমলে হঠাৎ করে অনেকে কীভাবে জাহাজের মালিক হয়েছিল আমার জানা নেই। শোনা যায় এরা টেকেরহাটে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর খাদ্য সরবরাহ করতো। শোনা যায় উনি (কাজী জাফর উল্যাহ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়া অবস্থায় আইয়ুব খানের ছাত্র সংগঠন করতেন।
উল্লেখ্য, ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ। গত দু’টি সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে বিজয়ী হন চিফ হুইপের ছোট ভাই যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
