বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা যখন তুঙ্গে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মধ্যে ‘অত্যন্ত বড় ধরনের’ একটি এআই চিপ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উপসাগরীয় অঞ্চলের সাম্প্রতিক সফর শেষে এই ঘোষণা দেন। শুধু প্রযুক্তিই নয়, উভয় দেশের মধ্যে জ্বালানি, বিমান, ধাতু শিল্প এবং বিনিয়োগ খাতে বহু বিলিয়ন ডলারের আরও একাধিক চুক্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনীতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শুক্রবার (১৬ মে) মিডল ইস্ট আই-এর এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় যে ট্রাম্পের সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউএই-এর মধ্যে বিশ্বে সর্বাধুনিক এআই সেমিকন্ডাক্টর কেনার বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়। চুক্তির আওতায় আমিরাত মার্কিন কোম্পানিগুলো থেকে লাখ লাখ উন্নত এআই চিপ কিনবে এবং ডেটা সেন্টার গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। হোয়াইট হাউস সূত্র জানায়, এই চুক্তি শুধু এআই প্রযুক্তিতেই সীমাবদ্ধ নয়—এতে ঐতিহ্যগত ব্যবসায়িক অংশীদারত্বের ছাপও স্পষ্ট। ট্রাম্প বলেন, ‘এটি একটি খুব বড় চুক্তি, একটি বিশেষ প্রকল্প।’ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে এই অংশীদারত্বকে কৌশলগতভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
চুক্তির বিস্তারিত অনুযায়ী, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ বোয়িং ৭৮৭ ও ৭৭৭এক্স মডেলের বিমান কিনতে জেনারেল ইলেকট্রিক ইঞ্জিনসহ ১৪.৫ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার দিয়েছে। তেল ও গ্যাস খাতে এক্সনমোবাইল, অক্সিডেন্টাল এবং ইওজি রিসোর্সেস আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির সঙ্গে ৬০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে প্রবেশ করছে। পাশাপাশি এমিরেটস গ্লোবাল অ্যালুমিনিয়াম যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমায় ৪ বিলিয়ন ডলারের একটি স্মেল্টার চালু করবে, যা ১৯৮০ সালের পর এই প্রথম। ট্রাম্প জানান, আমিরাত থেকে আরও ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, যদিও বাস্তবায়নের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। সব মিলিয়ে, এই সফর কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কই মজবুত করেনি, বরং প্রযুক্তি, শিল্প ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচনের পথ তৈরি করেছে। তথ্যসূত্র : মিডল ইস্ট আই