ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহত হয়েছে আরও ২৬ ফিলিস্তিনি। গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্বিচার বোমা হামলা আর গুলিতে নিহত হয়েছেন তাঁরা। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আজ বুধবার কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
আজও উপত্যকাজুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে বেসামরিকদের তাঁবু লক্ষ্য করে বিমান থেকে চালানো হচ্ছে হামলা। খান ইউনিসে এখন পর্যন্ত একজন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।
এদিকে, দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গাজা অবরোধ করে রেখেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কোনো ত্রাণসহায়তা। আলজাজিরার তথ্যমতে, গাজা উপত্যকার পানি সরবরাহের ৭০ শতাংশই বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান মেকোরোট থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে পানি সরবরাহ করা হয়। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল নতুন করে হামলা শুরুর পর পানি সরবরাহ বন্ধ করতে শুরু করে তারা।
গাজার পৌরসভার মুখপাত্র হোসনি মেহান্না বলেন, ‘গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে শুজাইয়া এলাকার প্রধান পাইপলাইনে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। অঞ্চলটিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তীব্র বোমাবর্ষণের কারণে পাইপলাইনের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তবে কারণ যাই হোক, এর পরিণতি ভয়াবহ। মেকোরোট থেকে পানির প্রবাহ শিগগিরই পুনরুদ্ধার করা না গেলে গাজার মানুষ পিপাসায় মারা যাবে।’
এমন পরিস্থিতিতে গাজাকে ‘মৃত্যুচক্র’ (ডেথ লুপ) বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, ‘খাবার থেকে শুরু করে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ হয়ে গেছে। নারকীয় যন্ত্রণার দরজা আবার খুলে গেছে। গাজা এখন এক মৃত্যুকূপ, সাধারণ মানুষ এক অন্তহীন মৃত্যুচক্রে আটকে পড়েছে।’