জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া ইউনিসেফ প্রধান ক্যাথরিন রাসেলের বিরুদ্ধে গাজার শিশুদের প্রতি উদাসীনতা দেখানোর গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, রাসেল গাজার শিশুদের তুলনায় ইউক্রেনের শিশুদের গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের গাজার শিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় নেবেনজিয়া বলেন, “গাজায় শিশু মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে ইউনিসেফ প্রধানের নিরাপত্তা পরিষদে ব্রিফ করতে অস্বীকৃতি একটি নিন্দনীয় পদক্ষেপ।” তিনি এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেন।
নেবেনজিয়া উল্লেখ করেন যে গত ডিসেম্বর রাসেল ইউক্রেনের শিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে পরিষদে ব্রিফ করেছিলেন। কিন্তু গাজার শিশুদের করুণ পরিস্থিতি নিয়ে তার নীরবতা ইউনিসেফের পক্ষপাতমূলক আচরণকে প্রকাশ করে। তিনি বলেন, “এটি স্পষ্ট যে ইউনিসেফের কাছে গাজার শিশুরা ইউক্রেনের শিশুদের মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়। অন্যথায় এই নীরবতা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে রাসেল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ অবলম্বন করছেন এবং ইউনিসেফের একজন নিরপেক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। নেবেনজিয়া বলেন, রাসেলের এই আচরণ জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী।
রাশিয়ার এই সমালোচনা শুধু ইউনিসেফকেই নয়, ইউরোপীয় দেশগুলোকেও আক্রমণ করে। নেবেনজিয়া অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো গাজার শিশু হত্যার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং এর পরিবর্তে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছে।
নেবেনজিয়া মন্তব্য করেন, “গাজার যুদ্ধ পশ্চিমা বিশ্বের মানবাধিকারের প্রতি প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে।” তিনি আরও বলেন, গাজার শিশুদের রক্ষায় ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং সক্রিয় ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয় যে, সকল শিশুর জীবনের মূল্য সমান এবং তা সুরক্ষিত রাখতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি