কথায় আছে, ‘ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না।’ মানুষের লোভকে প্রতীকী অর্থে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে এই কথা ব্যবহার করা হয়। আক্ষরিকভাবে না হলেও অনেকটা একই ভাবাদর্শ নিয়ে ২০২৩ সালের শুরু থেকে ফুটবলার খোঁজার সন্ধানে নামেন সৌদি আরবের ফুটবল কর্তারা। যেখানে তাঁদের মূলনীতি ছিল, টাকা ছড়ালে ফুটবলারের অভাব হয় না। বিপুল পরিমাণ টাকা উড়িয়ে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে এসে ফুটবলের অভিমুখ বদলে দেওয়া ছিল তাঁদের লক্ষ্য।
শুরুতে সৌদি প্রো লিগের এই উদ্যোগ দারুণভাবে ফলপ্রসূ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছিল। কারণ, প্রো লিগের এই প্রকল্প শুরুই হয়েছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো মহাতারকাকে কেনার মধ্য দিয়ে। পর্তুগিজ মহাতারকাকে নিয়ে আসে রিয়াদভিত্তিক ক্লাব আল নাসর।
রোনালদোকে কেনার মধ্য দিয়ে ফুটবল–দুনিয়ার নজরও কেড়ে নেয় তারা। এমনকি লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নেওয়ার জন্যও মরিয়া হয়ে মাঠে নামে তারা। যদিও এ দুজনের ক্ষেত্রে কাজ করেনি সৌদি আরবের টাকা ওড়ানোর ফর্মুলা। মেসি–এমবাপ্পের কেউই সৌদি আরবমুখী হননি।
এ দুজনকে নিতে না পারলেও নেইমারকে ঠিকই কিনে নেয় সৌদি ক্লাব আল হিলাল। ব্রাজিলিয়ান মহাতারকার সৌদি আরবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের ফুটবলের জন্য বড় ঘটনাই ছিল। রোনালদো ও নেইমার ছাড়াও সৌদি ফুটবলকে যাঁরা নিজেদের পায়ের স্পর্শে ইউরোপে আলোচিত করে তুলেছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন করিম বেনজেমা, সাদিও মানে, রবার্তো ফিরমিনো, এনগোলো কান্তে এবং রিয়াদ মাহরেজের মতো তারকা।
একের পর এক তারকা খেলোয়াড় কেনার পেছনে সৌদি আরবের উদ্দেশ্য ছিল, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং মানের দিক থেকে তাদের সমকক্ষ হওয়া। পাশাপাশি বিশেষ ব্র্যান্ড মূল্যও তৈরি করতে চেয়েছিল তারা। এখন ২১ মাস পর এসে পেছনের সময়টাকে মূল্যায়ন করলে দেখা যাচ্ছে, সৌদি আরবের ফুটবল প্রকল্প যত গর্জেছে, তত বর্ষেনি। অর্থাৎ সৌদি আরবের ক্লাব ফুটবল যে লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিয়েছিল, তা এখনো দূরের বাতিঘর। এমনকি যে উদ্দীপনা নিয়ে প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল, সেই উদ্দীপনাও সম্ভবত কমে এসেছে। চলতি মৌসুমে সৌদি আরবের ক্লাবগুলোর খরচের দিকে তাকালেই চিত্রটা স্পষ্ট হবে।