লাল মাটি কালো হয়ে যাবে। বাউন্স ও ক্যারি হবে ক্ষণস্থায়ী। বল খুব টার্ন করবে এমনটাও আশা করা যাচ্ছে না। কানপুরের গ্রিন পার্কের পিচ সম্ভবত এমনই হতে পারে। যেখানে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে।পিচটি ধীরগতির এবং কম বাউন্সের হবে, যা আগের চেন্নাই ম্যাচের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কানপুরের পিচটি কালো মাটির তৈরি হওয়ায় বল কম উঠবে এবং ম্যাচের সময় যত গড়াবে ততেই উইকেট তার আচরণ বদলাবে। এই পিচের ধীরগতি এবং কম বাউন্সের কারণে ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে, তবে বোলারদের ট্যাকটিকাল পরিবর্তন আনতে হবে ম্যাচে সাফল্য পেতে।সাধারণত কানপুরের উইকেটের আচরণ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়। প্রথম দিনটা পেসারদের জন্য সহায়ক হয়। বিশেষ করে নতুন বলে। এসময় বলের বাউন্স এবং উইকেটকিপারের কাছে ভালো ক্যারি দেখা যায়। সকালে পিচে কিছুটা আর্দ্রতার কারণে বলের পেসাররা ভালো সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন। তবে দ্বিতীয় দিনেই বদলে যায় উইকেটের আচরণ। ঐ দিন থেকেই সেটা হয়ে ওঠে স্পিন সহায়ক। পিচে ফাটল ধরতে থাকে এবং স্পিনাররা বল থেকে ভালো টার্ন করাতে পারেন। ধীরে ধীরে উইকেট হয়ে যায় মন্থর, ফলে ফাস্ট বোলারদের জন্য গতি বের করা কঠিন হয়, কিন্তু স্পিনাররা বল ঘোরানোর জন্য বেশি গ্রিপ পেয়ে থাকেন।
এটা তো গেল বোলিংয়ের কথা। কিন্তু কানপুরের উইকেট কতটা ব্যাটিং সহায়ক? সাধারণত শুরুটা ব্যাটসম্যানদের জন্য সহজ হয়। প্রথম দুই দিন পিচ সাধারণত ব্যাটিংয়ের জন্য সহায়ক থাকে, যেখানে ভালো বাউন্স এবং পেস পাওয়া যায়। তবে ব্যাটসম্যানদের কিছুটা সুইং এবং সিম মোকাবেলা করতে হয়। তবে ধীরে ধীরে হতে থাকে কঠিন। উইকেটে ফাটল ধরলে ব্যাটিং কঠিন হয়ে যায়, বিশেষ করে ভালো স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে। ভেরিয়েবল বাউন্স ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলা কঠিন করে তুলে।কানপুরের এই স্টেডিয়াম তাই ঐতিহাসিকভাবে অনেক উত্তেজনাপূর্ণ টেস্ট ম্যাচের আয়োজন করেছে, যেখানে স্পিন বোলিং শেষ পর্যন্ত নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টেস্টে ভারত তিন স্পিনার অশ্বিন, জাদেজা এবং অক্ষরকে নিয়েছিল একাদশে। ২০১৬ সালের পর এই ভেন্যুতে সেটিই প্রথম টেস্ট ছিল, সেটিও ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই টেস্ট গড়িয়েছিল পঞ্চম দিনে। যদিও ২০১৬ সালে ভারত সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে জিতেছিল কিউইদের বিপক্ষে। ১৯৭ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল। সেখানে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা ২০২১ সালে ম্যাচটি ড্র করে প্রতিরোধ দেখিয়েছিলেন।
যদিও এখানে মূল চাবিকাঠিটা বোলারদের হাতে। লড়াই করতে হতে প্রতিরোধটা গড়তে হবে তাদের দিক থেকেই। ব্যাটসম্যানরা বোলারদেরকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে তখনই, যখন সেখানে ভালো একটা সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে দল। ২০২১ সালের টেস্টে শ্রেয়াস আইয়ারের অভিষেক সেঞ্চুরি হয়েছিল।কানপুরের পিচের মন্থর প্রকৃতি উভয় দলের নির্বাচন পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে বাধ্য। সম্ভবত তৃতীয় পেসারের পরিবর্তে তৃতীয় স্পিনারকে নেওয়া হতে পারে। আর এই কারণেই ভারতীয় দলে আসতে পারে একটি পরিবর্তন। কুলদীপ যাদব অথবা অক্ষর প্যাটেলকে খেলানো হতে পারে কোনো এক পেসারকে বসিয়ে রেখে। বাংলাদেশ দলেও সাকিব আল হাসানের চোটের কারণে আসতে পারে বদল। তাকে বসিয়ে রেখে হয়ত তাইজুল ইসলামকে একাদশে সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক হান্নান সরকার বলছেন অন্য কথা। গণমাধ্যমের সঙ্গে তার আলাপে স্পষ্ট, ‘চোট গুরুতর না হলে অলরাউন্ডারের ভূমিকায় খেলতে পারেন সাকিব। চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ের সময় বাঁ হাতের তর্জনীতে চোট পাওয়ায় সাকিব আল হাসানের চোট নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।’সাকিব খেললে কপাল পুড়তে পারে নাহিদ রানার। তার জায়গায় বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে আনতে পারে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। সফরকারীদের দলে আছেন অফস্পিনার নাঈম হাসানও।