মণিপুরে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আহত ৯ জনের মধ্যে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে এবং বাকিরা বিস্ফোরণের ফলে আহত হয়েছেন। এদিকে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, বোমা বিস্ফোরণের আগে আকাশে দুটি ড্রোন উড়তে দেখেন তিনি। এর পরেই বোমার আওয়াজে কেঁপে ওঠে এলাকা। বিস্ফোরণের পরেই গোলাগুলি শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তারক্ষীরা পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির মধ্যে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী এক নারী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাজ্যের কাংপোকপি জেলার নাখুজাং গ্রামে একটি ড্রোন হামলা হয়েছে। ভয়ে মানুষ বাঁচার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ছোটাছুটি শুরু করে। তখনই এই গোলাগুলির ঘটনা শুরু হয়। এক মাস আগেই রাজ্যের শান্তি ফেরাতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছিল রাজ্যের সরকার এবং তাতে সাফল্যও আসে। দুই গোষ্ঠী কুকি এবং মেতেইরা তাদের মধ্যে একটি চুক্তি করে। শান্তিচুক্তিটি হয়েছিল মণিপুরের জিরিবাম জেলায়। তবে এক জেলার চুক্তি অন্য জেলায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। দ্য ওয়াল এ খবর জানায়। অপর এক খবরে বলা হয়, গুলি ও বোমাবর্ষণে ফের অশান্ত ভারতের মণিপুর।
রাজ্যটিতে রোববার ‘সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিদের’ গুলিতে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ওই নারীর ১২ বছর বয়সী মেয়েসহ মোট ৯ জন আহত হয়েছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। আহতদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্য রয়েছেন। রাজ্যটির স্বরাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক বিবৃতিতে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা দুইজনে দাঁড়িয়েছে। রাজ্য পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে কুকি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত কাংপোকপি জেলার নাখুজাং গ্রাম থেকে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল পশ্চিমের কাদাংবন্দের দিকে গোলাগুলি শুরু হয়। এতে সুরবালা এনগাংবাম নামে ৩১ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক ব্যক্তি। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি। দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয়েছেন সুরবালার ১২ বছরের মেয়েসহ মোট ৯ জন। আহতদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য এবং একজন সাংবাদিক রয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে এ গোলাগুলি।
এদিকে এদিন মণিপুরে ড্রোনের মাধ্যমে বোমা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। কাদাংবান্দ গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, গুলি চালানোর পাশাপাশি ড্রোনের মাধ্যমে বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ফেলা হয়েছে। ড্রোন থেকে ফেলা বোমায় এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বোমা ফেলার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াচ্ছেন গ্রামবাসীরা। মণিপুর পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বলেছে, ‘কথিত কুকি জঙ্গিরা উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করে অসংখ্য বোমা (আরপিজি) ফেলেছে। বোমা ফেলার জন্য সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করা হয় কিন্তু মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের বিরুদ্ধে বোমা হামলার জন্য ড্রোনের এই ব্যবহার উদ্বেগজনক।’ ওয়াল, এনডিটিভি।