সবাইকে হতবাক করে হঠাৎ আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেস। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশ সময় আগামী শনিবার ভোরে ঘরের মাঠে প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হবে উরুগুয়ে। জাতীয় দলের জার্সিতে এ ম্যাচটিই হতে যাচ্ছে ৩৮ বছর বয়সী স্ট্রাইকারের শেষ ম্যাচ। গতকাল সোমবার সংবাদমাধ্যম দ্য আতলেতিককে অবসরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুয়ারেস নিজেই।
আতলেতিকের সঙ্গে আলাপকালে সুয়ারেস বলেছেন, ‘আমি এটা নিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি। আমার মনে হয় এটাই অবসরের সঠিক সময়। আমি যখন জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচটা খেলতে নামব, আমি নির্ভার থাকতে চাই। ২০০৭ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার খেলতে নামার আগে যেমন রোমাঞ্চিত ছিলাম, শেষ ম্যাচটা নিয়েও আমার একই অনুভূতি হচ্ছে। সেই ১৯ বছরের তরুণ খেলোয়াড়টি এখন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, বুড়ো খেলোয়াড়।
তবে এটাকে যেভাবেই দেখা হোক না কেন, জাতীয় দলের হয়ে অবিশ্বাস্য একটা ইতিহাস সঙ্গী করে শনিবার শেষ ম্যাচটা খেলতে নামব।’ অবশ্য সুয়ারেস উরুগুয়ের হয়ে যা করেছেন, তাতে নিজের অর্জনকে অবিশ্বাস্য বলতেই পারেন। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলম্বিয়ার ম্যাচ দিয়ে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে ১৪২ ম্যাচ খেলেছেন সুয়ারেস। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের উরুগুয়ের হয়ে ৬৯ গোল করেছেন, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
উরুগুয়ের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলা সুয়ারেস কখনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও ২০১০ বিশ্বকাপে ঘানার বিপক্ষে ম্যাচে আলোচিত হ্যান্ডবলের কারণে ব্যাপক পরিচিত। কোয়ার্টার ফাইনালে গোললাইনে হাত দিয়ে ধরে ঘানার একটি নিশ্চিত ঠেকিয়ে দেন সুয়ারেস। পরে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেও সে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন ঘানার আসামোয়াহ গায়েন। পরে টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যায় উরুগুয়ে। সে ম্যাচ লালকার্ড দেখলেও অঘোষিত জাতীয় বীরে পরিণত হয়েছিলেন সুয়ারেস। তবে সাফল্য বিবেচনায় উরুগুয়ের জার্সিতে সুয়ারেস সেরা সময়টা কাটিয়েছেন ২০১১ সালে। সে বছর কোপা আমেরিকা জেতার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন তিনি।