গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর বিকেলে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী ও চাটখিল থানায় হামলা চালায় একদল দূর্বৃত্ত। এসময় তারা ওই দুটি থানায় অস্ত্র, গুলি’সহ বিভিন্ন মালামাল লুটপাট চালায়। থানা থেকে লুণ্ঠিত ওইসব অস্ত্র ও মালামাল বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে আনসার।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কার্যালয়ে অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনীর মাইজদী ক্যাম্পের টুআইসি মেজর রিফাত আনোয়ার এর কাছে হস্তান্তর করেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট রোকসানা বেগম।
উদ্ধার হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে, ১টি মোটরসাইকেল, ২টি ল্যাপটপ, কম্পিউটার কীবোর্ড ১টি, মাউস ১টি, ১টি এসএমজি, ৫টি শর্টগান, ৩২ রাউন্ড সীসা কার্তুজ, ৭৫৬ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ৫টি সাউন্ড গ্রেনেড, ১০টি টিয়ারসেল, ৭টি হ্যান্ডকাপ, ১টি হ্যান্ড মাইক, ১টি পাইপগান, ১টি ওয়ারলেস, ২টি ওয়ারলেসের ব্যাটারি, ট্রাফিক সিগনাল লাইট ১টি, এসএমজি ম্যাগাজিন ১টি, রাইফেল ১টি, পিস্তল ২টি, গ্যাসগান ২টি, পিস্তলের গুলি ১১ রাউন্ড ও রাবার বুলেট ৬৭টি রাউন্ড।
কমান্ড্যান্ট রোকসানা বেগম জানান, চাটখিল ও সোনাইমুড়ী থানায় হামলার সময় হামলাকারীরা দুটি থানা থেকে অস্ত্র ও গুলি‘সহ মূল্যবান মালামল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে আমাদের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা লুণ্ঠিত অস্ত্রগুলো উদ্ধারে নামে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তাদের সোর্স এর মাধ্যমে একাধিক স্থান থেকে হস্তান্তরকৃত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে। বাকি অস্ত্রগুলো উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
মেজর রিফাত আনোয়ার বলেন, আনসার থেকে অস্ত্রগুলো আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা এগুলো হস্তান্তর করবো।
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর সোনাইমুড়ী বাইপাসে আনন্দ মিছিল করে শিক্ষার্থী’সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বিকেল ৫টার দিকে আনন্দ মিছিল থেকে সোনাইমুড়ী থানাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে থানায় হামলার চেষ্টা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। ওইসময় থানার ছাদ থেকে হামলাকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে পুলিশ। এসময় হামলাকারীরা থানার ভিতরে ডুকে ভাঙচুর শুরু করে এবং পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলার সময় ও পরবর্তীতে থানায় ব্যপক লুটপাট চালানো হয়।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে সোনাইমুড়ী থানার এসআই বাছির, এএসআই নাছির, কনস্টেবল মোশাররফ হোসেন ও গিয়াস উদ্দিন। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়, ইয়াছিন (১৪), তানভীর (২৪), ইয়াছিন মিয়া (২৩), রাফি (১৮), কাউসার মিয়া (১৯) ও শামীম (২৫)। ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত শতাধিক।