বাংলাদেশে চূড়ান্ত অরাজকতা, পতনের দ্বারপ্রান্তে হাসিনা সরকার। বাংলাদেশে একপ্রকার নৈরাজ্য চলছে। নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সহিংসতায় রবিবার কমপক্ষে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন জেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কার্যালয় জ্বালিয়ে দিচ্ছে। শেখ হাসিনার গদি টলমল। রবিবার অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ৮৮তে পৌঁছে গেছে। প্রতি মিনিটে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দাবি মেনে নেন, তাহলে আগামী দিনে একটি সামরিক সরকার প্রত্যক্ষ করতে চলেছে বাংলাদেশের মানুষ।
কারণ জনগণের রায় তার আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। স্পষ্টভাবে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনের কথা না বললেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা জনগণের পাশে আছে। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান অফিসারদের বলেছেন যে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক’ এবং ‘তারা সর্বদা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে এই সমর্থন অব্যাহত থাকবে’। একই সময়ে কয়েকজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া সমর্থন প্রদর্শনে তার ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি লাল করে দিয়েছেন। গত ১৯ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যোগ দেয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর নেতারা সহিংস বিক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে স্লোগান তোলা হচ্ছে – ‘হাসিনা সরকারকে যেতে হবে’।
ঢাকা-ভিত্তিক একটি সূত্র ইন্ডিয়াটুডে-কে জানিয়েছে- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল কিন্তু পুলিশ বা অন্য কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন , ‘বেশিরভাগ জেলায় আওয়ামী লীগের অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। একজন এমপির বাসভবনে হাজার হাজার জনতা হামলা করেছে এবং তাকে পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে।’ ঢাকা-ভিত্তিক সূত্রগুলি বলছে যে, এবার হয়তো হাসিনার যাবার সময় উপস্থিত এবং একটি সামরিক সরকার তার জায়গা নেবে। তবে হাসিনা বাংলাদেশে থাকবেন কিনা তা নির্ভর করবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর।
তিনি সবাইকে অনুরোধ করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন বটে তবে জনগণের ক্ষোভ তার এবং তার দলের প্রতি বেড়েই চলেছে । একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা ডালাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্য শাফকাত রাব্বি বলছেন – বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কিছু সদস্য যারা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল তারা নিজেরাই হাতে আইন তুলে নিয়েছে এবং প্রায় ৪০ জন ছাত্রকে হত্যা করেছে’। শাফকাত রাব্বি বলছেন, বাংলাদেশের রাস্তায় প্রায় এক কোটি মানুষ প্রতিবাদে নেমেছে।
ঢাকাভিত্তিক সূত্র মোতাবেক, হাসিনা সরকারকে সমর্থন দেওয়ায় বাংলাদেশিদের মনে ভারতের বিরুদ্ধে তিক্ততা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ১৯ জুলাই থেকে একটি নজিরবিহীন বিক্ষোভ প্রত্যক্ষ করছেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে, হাসিনা সরকার এই মুহূর্তে পতনের দ্বারপ্রান্তে।