দেশে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার বেড়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে এবং এ ধরনের অস্ত্রোপচারে বিধিনিষেধ আরোপে দ্রুত রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কমিশন এসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে। বিবৃতিতে কমিশন বলেছে, অল্প সময়ের ব্যবধানে দেশে অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসব উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া শিশু জন্মে অস্ত্রোপচার করা মা ও নবজাতকের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।
বিবৃতিতে কমিশন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আরও বলে, বিভিন্ন সংবাদে বলা হয়েছে, পেশাজীবী চিকিৎসকদের সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) ৩১তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের একটি অধিবেশনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেছেন, দেশে শিশু জন্মে অস্ত্রোপচার যেন সুনামির মতো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে অস্ত্রোপচার বাড়ছে। দুটি শিশু জন্মের একটি হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। এতে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। বাড়ছে স্বাস্থ্য ব্যয়।
কমিশন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দেশে সিজারিয়ান প্রসবের হার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে মর্মে পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। প্রয়োজন ছাড়া শিশু জম্মে অস্ত্রোপচার করা মা ও নবজাতকের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। যেখানে স্বাস্থ্য খাতে প্রতি বছর সরকারকে বিপুল পরিমাণে অর্থ ভর্তুকি দিতে হয়, সেখানে মিডফোর্ডের মতো একটি স্বনামধন্য হাসপাতালে চিকিৎসক দ্বারা সিজার করতে চাপ দেওয়ার বিষয়টি কমিশনের কাছে বোধগম্য নয়। এরূপ সিজারিয়ান প্রসবের হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রকৃত কারণ কী তা খতিয়ে দেখা এবং সিজারিয়ান প্রসবের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন মর্মে কমিশন মনে করে।
কমিশন মত দেয়, মিডফোর্ড হাসপাতালের বিরুদ্ধে উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করতে পরিচালক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড) হাসপাতালকে বলা হয়েছে। একইসাথে প্রসবে অপ্রয়োজনীয় সিজার/সি-সেকশন বন্ধ, এ লক্ষ্যে নারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সিজারিয়ান প্রসবের হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির পেছনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।