বুধবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের দিকে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। আলজাজিরা, দ্য নিউইউয়র্ক টাইমস।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, লেবানন থেকে বেশ কয়েকটি লঞ্চ আরব আল-আরামশ এলাকায় আঘাত করেছে। এর একদিন আগে মঙ্গলবার লেবাননে এক হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরাইল। যার জবাবে বুধবারের এ হামলাটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবারও হিজবুল্লাহ বিস্ফোরক ডিভাইস দিয়ে ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। লেবাননের ভূখণ্ডে প্রবেশকারী চার সেনাকে আহত করেছে। ছয় মাসের সংঘর্ষের মধ্যে এই ধরনের প্রথম আক্রমণ এটি।
৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস হামলার পর থেকে ইসরাইল এবং হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহ প্রায় প্রতিদিন আন্তঃসীমান্ত গুলি বিনিময় করছে। এএফপির তথ্য অনুযায়ী, সহিংসতায় লেবাননে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৬৮ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। এর মধ্যে অন্তত ৭০ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, শত্রুতা শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তর সীমান্তের কাছে ১০ সেনা এবং ৮ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে সর্বাত্মক সংঘাতে ভয়ে সীমান্তের উভয় পাশ থেকে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
সব মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বিশেষজ্ঞরাও। ইসরাইল ও ইরানের হামলা-পালটাহামলা ও হুমকি এবং সেসঙ্গে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ সংঘাত ঘিরে উত্তেজনা যেন বেড়েই চলেছে। একদিকে গাজায় প্রতিদিন ইসরাইলের বোমা ও অনাহারে শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিনিয়ত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলতে থাকলেও থামছে না ইসরাইল। এত কিছুর পরও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার ভূখণ্ডে একটি শরণার্থী শিবির (ক্যাম্প) ও আবাসিক ভবনে পৃথকভাবে নতুন হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। বুধবার আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথক এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। এর মধ্যে মধ্যগাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাফাহতে আবাসিক বাড়িতে হামলায় নিহত হয়েছেন সাতজন। ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বাড়িটিতে ইসরাইলি বিমান হামলায় চার শিশুসহ ওই সাতজন নিহত হন। এছাড়া এই হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আলজাজিরা আরও জানিয়েছে, মাগাজি শরণার্থী শিবিরটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং ইসরাইল গাজায় আক্রমণ শুরু হওয়ার পর ভূখণ্ডটির উত্তরে হাজার হাজার পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়ে এই শিবিরে আশ্রয় নেওয়ায় এটি আরও ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।