রাত ১টার সময় যত ঘনিয়ে আসছে, সমর্থকদের মাঝে বাড়ছে চাপা উত্তেজনা। ইতিহাসে আজ যে আরও একটা থ্রিলার অপেক্ষা করছে। ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। যারা বছর দুয়েক আগে খেলেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের সেরা ‘টাই’। আজ রাতে ফের এমনই কিছু ফের অপেক্ষা করছে। ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল।
চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে এই দুই দলের লড়াই যেন অবধারিত। সবশেষ ৫ মৌসুমের মধ্যে এবারসহ চারবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল-সিটি। যার মধ্যে দুবার করে শেষ হাসি ভাগাভাগি করে নিয়েছে লা লিগা ও ইপিএলের দল দুটি। ইতিহাদে আজ রাতে টানা তৃতীয়বার নকআউট পর্বে লড়াইয়ে নামছে তারা। আর এই দলের বিপক্ষে আছে পেপ গার্দিওলার হৃদয় ভাঙার এক গল্প। যেখানে তার শিষ্যদের কাছ থেকে নিশ্চিত জয় কেড়ে নিয়েছিলেন করিম বেনজেমারা।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেদিন রিয়ালকে চোখ রাঙাচ্ছিল পরাজয়। ঘনিয়ে আসছিল বিদায়ের ক্ষণ। তবে রিয়াল মাদ্রিদ তো শেষের আগে শেষ হওয়ার নয়! শেষ মুহূর্তে পরপর দুই মিনিটে দুই গোল করে দলের আশা বাঁচান রদ্রিগো। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে পেনালটি থেকে জালের দেখা পান করিম বেনজেমা। চেনা আঙিনায় আরেকটি প্রত্যাবর্তনের অসাধারণ গল্প লিখে, ম্যানচেস্টার সিটির আশা গুঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে যায় কার্লো আনচেলত্তির দল।
সেদিন ম্যাচের ৭২ মিনিট পর্যন্ত উভয় দলই ছিল গোলশূন্য। তবে ৭৩তম মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে এগিয়ে যায় সিটি। মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে বল ধরে এগিয়ে বক্সে ঢুকে ডান দিকে বাড়ান সিলভা। বাঁ পায়ের কোণাকুণি শটে বল জালে পাঠান রিয়াদ মাহরেজ। সেই গোলের পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছিলেন সিটিজেনরা। কিন্তু নিজের সেরাটা বোধহয় রিয়াল জমা রেখেছিল শেষ মুহূর্তের জন্য।
৮৭তম মিনিটে দ্বিগুণ হতে পারত ব্যবধান। বাঁ দিক থেকে জ্যাক গ্রিলিশের প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ফেরান ফেরলঁদ মঁদি। রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু এরপরই। ৯০তম মিনিটে বেনজেমার ক্রসে কাছ থেকে পায়ের টোকায় সমতা টানেন রদ্রিগো। দ্বিতীয়ার্ধে টনি ক্রুসের বদলি নামা এই ব্রাজিলিয়ান যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আবার জালে বল পাঠান। কারভাহালের ক্রসে ঠিক মতো হেড করতে পারেননি মার্কো আসেনসিও, তার পেছনেই থাকা অরক্ষিত রদ্রিগো কাজে লাগান সুবর্ণ সুযোগ।
দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-৫। যোগ করা সময়েই দুই দলের সামনে সুযোগ আসে ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর কিছুক্ষণ পরই আবারও সিটির জালে বল! ডি-বক্সে ফরাসি ফরোয়ার্ডকে সিটির দিয়াস ফাউল করায় পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল। সুযোগ পেয়েই ৯৫তম মিনিটে সফল স্পট কিকে রিয়ালকে এগিয়ে নেন বেনজেমা।
তারপর রিয়ালও পায়নি আর কোনো গোলের দেখা। সিটিও পারেনি ঘুরে দাঁড়াতে। তাতে ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই পেয়ে যায় রিয়াল-ম্যানসিটির রূপকথার এক ম্যাচের।