ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে নারী ও শিশু হত্যা গোটা বিশ্ববিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ইসরায়েলী বাহিনী গাজার হাসপাতাল, রিফিউজি ক্যাম্প, ত্রাণ বিতরণস্থলসহ সর্বত্র বেসামরিক নিরস্ত্র মানুষের ওপর নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে। যার ফলে সেখানে এক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এমত পরিস্থিতিতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বের সকল মানবতাবাদীদের সোচ্চার হবার আহ্বান জানিয়েছেন এবি পার্টির নেতারা।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে আজ রবিবার এবি পার্টি আয়োজিত গণনিন্দা ও প্রতিবাদী গণইফতারে এ আহ্বান জানান বক্তারা।
বিকেল ৫টায় পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় বিজয় নগরের বিজয়-৭১ চত্ত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর বর্ষীয়ান আলেম মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম।
মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, প্রতিদিন ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গাজার লোকেরা শহীদ হচ্ছেন। এই রমজানে তারা ঘাস খেয়ে জীবন যাপন করার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের ত্রাণ শিবির গুলোতে পর্যন্ত দখলদার বাহিনী হামলা চালাচ্ছে অথচ গোটা পৃথিবীর বিবেক হিসেবে যারা দাবি করে তারা এর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেকোনো কিছু হলেই মানবাধিকারের কথা বলে, মানবতার কথা বলে কিন্তু ফিলিস্তিনের গণহত্যা নিয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বর্তমান এই আওয়ামী লীগ সরকারও একই কায়দায় দেশের ইসলামি তাহজিব তমাদ্দুনকে ধ্বংস করে ইফতার মাহফিলে হামলা করছে।
ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, আমরা আজকে ইফতার করছি, সেহরি করছি, রোজা রাখছি। কিন্তু কষ্টের বিষয় হচ্ছে আমাদের হৃদপিণ্ড ফিলিস্তিনের মানুষ আজ সেহরি ও ইফতার করার কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই রোজা রাখছে। দিনকে দিন ফিলিস্তিন ভূ-খণ্ড থেকে মুসলমানদের মুছে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বাংলাদেশেও আজ একই অবস্থা তৈরি হয়েছে। ভারতের সহায়তায় ক্ষমতা দখলের পর এই সরকার এখন মোদির প্রেসক্রিপশনে চলছে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের পবিত্রভূমি গাজায় চলছে মানবিক বিপর্যয় আর এশিয়ার পূণ্যভূমি বাংলাদেশে চলছে সভ্যতার বিপর্যয়। দুই জায়গায় দুই অসভ্য জুলুমবাজের খপ্পরে মানবতা আজ ভূলুণ্ঠিত। ইসরাঈলী বাহিনী আর আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা কর্মীদের নীতি ও চরিত্রে অদ্ভুত মিল। ইসরায়েলি মানবতাবিরোধীরা যেমন হত্যা, ধর্ষণ, বোমা বর্ষণে বেপরোয়া তেমনি বাংলাদেশের জালেম বাহিনী আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের কিছু নেতা কর্মীর হাতে মানুষের জান-মাল-ইজ্জত আজ ছিন্ন ভিন্ন। এই দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই মানবতাবাদীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি ফিলিস্তিনে নির্বিচার গণহত্যা বন্ধে কার্যকর যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
গণনিন্দা ও প্রতিবাদী গণইফতারে আরো উপস্থিত ছিলেন মাসিক মঈনুল ইসলামের সম্পাদক ও হাটহাজারী মাদরসসার শিক্ষক মাওলানা মুনির আহমদ, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুবপার্টির আহ্বায়ক এ বি এম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রুনা হোসাইন, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, শাহীনুর আক্তার শীলা, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ি থানা সমন্বয়ক সিএম আরিফ, ছাত্রনেতা হাসিবুর রহমান খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।