গাজীপুরের শ্রীপুরে ষাটোর্ধ্ব শারীরিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ ও তার স্ত্রীকে বসতঘর ভেঙে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। বসতঘর ভেঙে দেওয়ার পর থেকে বাড়ির পাশে গাছের নিচে রাত্রিযাপনের জন্য অবস্থান করছেন অসহায় স্বামী-স্ত্রী।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রতিবন্ধী লাল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লাল মিয়া বাড়ির পাশে একটি বাগানের ভেতর শুয়ে আছেন, পাশেই বিলাপ করছেন তার স্ত্রী রাহেলা বেগম। জরাজীর্ণ ঘরের ঢেউটিনের চাল খুলে এদিক-সেদিক ফেলে রেখেছে। ঘরের আসবাবপত্র এলোপাতাড়িভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রতিবেশীরা ঘটনা দেখতে বাড়িতে এসে ভিড় করলেও এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত সিরাজুল ইসলামের বিপক্ষে কেউ কথা বলতে পারেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. চান মিয়া বলেন, তাদের ডাক-চিৎকার শুনে এসে দেখি বসতবাড়ির চাল খুলে নিচ্ছে। ঘরের আসবাবপত্র ফেলে দিচ্ছে। এটা একটা অমানবিক কাজ। এর চেয়ে খারাপ কাজ আর হতে পারে না। আমরা কয়েকজন প্রতিবাদ করার কারণে আমাদেরকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়। আমরা নিরুপায় একজন প্রতিবন্ধীর বসতবাড়ি রক্ষা করতে পারলাম না।
অভিযুক্ত সিরাজুল হকের বক্তব্য নিতে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার স্ত্রী বেগম বলেন, আমরা তাদের কাছে জায়গা জমি পাই, এজন্য ঘরবাড়ি ভাঙচুর করছে। এরপর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসে বসতবাড়ি নির্মাণ করে দিতে বলেছে। আমার স্বামী তাদের ঘরবাড়ি পুনরায় নির্মাণ করে দেবে।
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ইদ্রিস আলী বলেন, অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলামের এক ছেলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগে চাকরি করলেও এলাকায় নিজেকে সচিব বলে পরিচয় দেয়, আসলে সে কোনো সচিব না। এলাকায় তাদের দাপটে অনেকেই অসহায়।
শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আকবর আলী খান বলেন, জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। আমার দিক থেকে ওই পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।