ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ বলছেন যে, হামাসের হাতে বন্দী ইসরাইলিদের ফিরিয়ে না দিলে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি যুদ্ধে কোনো জয় হবে না। হারজোগ ইসরাইলের নিহত সৈন্যদের এক স্মরণ অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন, ‘আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য দৃঢপ্রতিজ্ঞ এবং এটা আমাদের কাছে সন্দেহের বাইরে স্পষ্ট যে, বেসামরিক ও সামরিক বন্দীদের প্রত্যাবর্তন ছাড়া কোনো বিজয় নেই।
ইসরাইলি প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যে স্পষ্টত বোঝা যায় যে, হামাসকে ধ্বংস করার আশা ইসরাইল এখন আর করে না। ইসরাইলের আগের অবস্থান থেকে এই সরে আসা কৌশলগত পরাজয়ের ইঙ্গিত বলে মনে করেন মিডল ইস্ট আইয়ের সম্পাদক ডেভিড হার্স্ট। তার মতে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই যুদ্ধ যতদিন সম্ভব চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকে ভেতর থেকে সাহায্য করা হচ্ছে না।
যুদ্ধ মন্ত্রিসভার দুই সিনিয়র সদস্য প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা প্রকাশ্যে অমান্য করেছেন। জনসাধারণের অবাধ্যতার প্রথম কাজটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের কাছ থেকে এসেছিল, গ্যালান্ট কার্যকরভাবে গ্যান্টজের প্রস্তাবিত একটি আইনের উপর একটি ভেটো দিয়েছেন, যার উপর ইয়েশিভদের জন্য সরকারি তহবিল নির্ভর করে। এ ধরনের আইন না থাকলে হেরেদি দলগুলো জোট ছেড়ে সরকার পতন ঘটাবে।
দ্বিতীয় কাজটি গ্যান্টজের কাছ থেকে এসেছিল, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে অননুমোদিত সফর করেছিলেন আর নেতানিয়াহু তার দূতাবাসগুলোকে গ্যান্টজকে কোনো সহযোগিতা না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এটাই নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক দুর্বলতা যে গ্যান্টজ বা গ্যালান্টকে তিনি বরখাস্ত করতে পারছেন না। যদিও তিনি মনে করছেন আমেরিকানরা গ্যান্টজকে দিয়ে তার প্রতিস্থাপন করতে চাইছে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নেতানিয়াহুর জন্য তৃতীয় ধাক্কা ছিল সেফার্ডি প্রধান রাব্বি ইসাক ইয়োসেফের বিবৃতি। সাম্প্রতিক বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন যে, সরকার যদি হারেদিমে বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা প্রয়োগ করে, তবে তারা ব্যাপকভাবে ইসরাইল ছেড়ে যাবে। এ ধরনের অর্থোডক্স ইহুদির সংখ্যা ১০ থেকে ১২ লাখ হতে পারে।
জেরুসালেম পোস্টের সম্পাদকীয়তে ইয়োসেফকে এ জন্য নিন্দা করা হয়েছিল, যেখানে বলা হয় যে তার কথাগুলো গাজায় তাদের জীবনের ঝুঁকিতে থাকা সৈন্যদের অপমান। কিন্তু ইসরাইলের সরকারের একদিকে সেনা দরকার যুদ্ধের জন্য, অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার মুখে নাগরিকদের ব্যাপকভাবে দেশ ত্যাগও ঠেকানো দরকার। এই ডিলেমায় সরকার অসহায় অবস্থায় পড়ে গেছে।