সারাজীবন ছাত্রলীগ, যুবলীগ আর আওয়ামী লীগ করেও ব্যারিস্টার সুমন এখনও স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্র হিসেবেই তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এখন দলের লোকেরাই তাকে বলেন ‘আরে ও তো স্বতন্ত্র’। আল্লাহ ছাড়া তাকে কেউ সম্মানিত করেন না। বিধাতা যাকে সম্মানিত করেন তাকে মানুষ সম্মান দিল কি না দিল তাতে কিছু যায় আসে না বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সাংসদ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
স্থানীয় সময় বুধবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের কুইন্স প্যালেসে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির দেওয়া নাগরিক গণসংবর্ধনায় এসব কথা বলেন তিনি।
‘মার্কিন রাজনীতিবিদদের মতো স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি করতে চান’ উল্লেখ করে তিনি বলেন দেশে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করে সরকারকে ১ হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে দিলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পুরস্কার পাননি তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একজন তিনশ কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে রেখেছিলেন। দুই বছর মামলা চালিয়ে আমি গতকাল উচ্চ আদালত থেকে রায় পেয়েছি এই তিনশ কোটি টাকার সম্পত্তি এখন বাংলাদেশ সরকার পাবে। এর দুই মাস আগে হোটেল শেরাটন নির্মাণের জন্য নুর আলীর বোরাক রিয়েল এস্টেট নামের প্রতিষ্ঠান ১৪ বছর ধরে সাতশ কোটি টাকা আটকে রেখেছিল। আমি মামলা করার পর বাধ্য হয়ে তারা সেই সাতশ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারকে ফেরত দেয়। আপনি বাংলাদেশের মতো একটি যদি এক হাজার কোটি টাকা দিতে পারেন স্বাভাবিকভাবে মনে মনে চিন্তা করেন কোনো না কোনো একটা পুরস্কার দেবে সরকার। কিন্তু আমার ১৪ বছরের কর্মকাণ্ডে পুরস্কার তো দূরের কথা ভালোভাবে স্বীকৃতিটুকুও পাই নাই। মানুষ যেখানে সম্মান দেয় না সেখানে সম্মান দেয় স্বয়ং বিধাতা। এটার প্রমাণ দিয়েছে আমার এলাকার মানুষজন। একজন রানিং মিনিস্টারের বিরুদ্ধে আমাকে ১ লাখ ভোটে পাস করিয়েছে এলাকার ভোটাররা।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সারাজীবন ছাত্রলীগ, যুবলীগ আর আওয়ামী লীগ করেছি তবুও আমি এখনও স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্র হিসেবেই আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমার দলের লোকেরাই এখন বলেন ‘আরে ও তো স্বতন্ত্র’। আল্লাহ ছাড়া আমারে কেউ সম্মানিত করেন না। বিধাতা যাকে সম্মানিত করেন তাকে মানুষ সম্মান দিল কি না তাতে কিছু যায় আসে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য তিনি দুই মাসে ২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। গত ৫০ বছরে কোনো এমপি আজ পর্যন্ত জনগণকে বলেন নাই ২০ কোটি বা ২৯ কোটি টাকা পেয়েছেন। তিনি বলেন, এটা তো আমার বাপের টাকা না। আমি যে বরাদ্দ পেয়েছি এটা তো আমার এলাকার সাড়ে ৬ লাখ মানুষের টাকা। মানুষ তখনই টাকার অংকের কথা লুকায়, যখন টাকা মারার ধান্দা থাকে।
তিনি মার্কিন রাজনীতিবিদদের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে কোনো তহবিল তছরুপের ঘটনা থাকলে তারা পদত্যাগ করেন। তিনি মার্কিনিদের মতো আন্তর্জাতিকমানের রাজনীতি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান।
মইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদার, এম এ আজিজ, অ্যাটর্নি ব্রুস ফিসার, মিজানুর রহমান শেফাজ, হেলাল চৌধুরী ও এম উদ্দিন আলমগীর প্রমুখ।