মশা নিধনে খাল (লেক) পরিষ্কার কর্মসূচি পরিদর্শনে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়েছেন মন্ত্রী-মেয়রসহ সেখানে উপস্থিত সবাই।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞাসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি লাইভ ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মন্ত্রী-মেয়রসহ অন্যরা হাত দিয়ে মশা তাড়াচ্ছিলেন। কেউ কেউ মশার কামড় খেয়ে হাত দিয়ে চুলকাচ্ছিলেন।
একপর্যায়ে মন্ত্রীর উদ্দেশে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকে আপনি নিজেই দেখতে পাচ্ছেন মশার কী অবস্থা, আপনারাই বসতে পারছেন না। চিন্তা করে দেখেন, মশা নিয়ে ঢাকার মানুষ কত দুর্ভোগের মধ্যে আছে। মশাকে কি আপনার কাছে চ্যালেঞ্জ মনে হয় না?
জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই এডিস নিয়ে বেশি আতঙ্কিত। কারণ, এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা মারা যান। সে ক্ষেত্রে বছরের প্রথম থেকে এ নিয়ে বলেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই বিষয়টি নিয়ে তিনি সতর্ক। জনগণের সহযোগিতা নিয়ে সিটি করপোরেশন মশা নিধনের চেষ্টা করবে। নিধন যতটুকু করতে পারবে করবে। তারপরও মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মশায় যন্ত্রণায় এখন অতিষ্ঠ শহর থেকে গ্রামের সবাই। এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যার জন্য বেকায়দায় পড়েছে সাধারণ জনগণ। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াও উত্তাল। বেশিরভাগই সরকারের কর্তৃপক্ষকে কঠিনভাবে গালিগালাজ করেনে।
রাজু আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, মশার কামড়ে জনগণ যে কত কষ্টে আছে, এটা তাহলে তারা একটু বুঝতে পারল মনে হয়।
রঞ্জু নামে একজন লিখেছেন, মেয়র সাহেবের মশা তাড়ানোটা আমার খুব ভালো লাগছে। এরপর যদি তাদের শিক্ষা হয়।
দেলোয়ার নামে একজন লিখেছেন, মশা জামায়াত শিবিরের প্রোডাক্ট। যার ফলে মন্ত্রী ও মেয়রকে কামড় দিয়েছে। নয়তো তাদেরকে কামড় দেওয়ার সাহস হতো না।
মামুন খন্দকার নামে একজন লিখেছেন, সবই উন্নয়ন। দেশ উন্নয়ন হচ্ছে। যার ফলে মশারও উন্নয়ন হচ্ছে।
রকি খান নামে একজন লিখেছেন, বারোশ’ কোটি টাকা খরচ করেও মন্ত্রী মশার হাত থেকে বাঁচতে পারল না। আবার তারা বড় বড় কথা বলেন। শরম থাকলে তারা পদত্যাগ করত।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, সাম্যন্য মশা তাড়াতে পারে না মেয়র ও মন্ত্রী সাহেবরা। তাহলে তারা দেশের উন্নয়ন করবে কি করে। আমরা দ্রুত তাদের পদত্যাগ দেখতে চাই। তারা এ পদের কোনো যোগ্য নয়।
উল্লেখ্য, গত বছর দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ বছরের রেকর্ড ভাঙে। সে বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন।