বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দৃশ্যমান তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। সুতরাং জনগণের দল হিসেবে বিএনপি সহ ৬৩টি গণতন্ত্রকামী দল এবং দেশপ্রেমিক জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছে। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অরাজক, লুটেরা, খুনি ও গণধিকৃত বাকশালী শাসনের পক্ষে সহযোগিতা করছে। গণনিপীড়ক-হন্তারক-মাফিয়া সরকারকে প্রকাশ্যে মদত ও সমর্থন দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন একটি ভারতীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। যা স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বার্থ ও মর্যাদার পরিপন্থি।
রিজভী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জনগণের ভোটাধিকার হরণ, গণতন্ত্র হত্যা এবং বিনা ভোটে অবৈধ ক্ষমতার অমরত্ব লাভের অপচেষ্টায় প্রতিবেশী ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদতের স্বীকারোক্তি প্রদান করে জোর গলায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। কথায় কথায় প্রায় সব মন্ত্রী ভারত বন্দনায় মত্ত হচ্ছেন। তাদের কথাবার্তা ও আচার-আচরণে মনে হচ্ছে-বাংলাদেশ এখন ভারতের স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচনে ভারতের ভূমিকার বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন বা শক্তিতে নয়, ভারতের শক্তি ও সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতার সিংহাসনে টিকে আছে। আর এই টিকে থাকার জন্য যত দমন-পীড়ন-গুম-খুন-হত্যা-মামলা-হামলা-অবিচার-অনাচার সব কিছু করছে সরাসরি ভারতের মদতে।
রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের ও ড. হাছান মাহমুদের অকপট স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে জাতিসংঘ সনদের ২ (৪) ধারা সরাসরি লঙ্ঘন করে ভারত আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার সব কিছুর উপর সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ করে চলেছে। ২ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল সদস্য-রাষ্ট্র আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ, ভীতি প্রদর্শন থেকে এবং জাতিসংঘের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনো উপায় গ্রহণ করা থেকে নিবৃত্ত থাকবে’।
আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় স্পষ্ট যে, ভারত এ নীতি লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় চাদর জনসম্মুখে ছুড়ে ফেলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেন রুহুল কবির রিজভী।