ক্ষমতাসীনদের ‘একচেটিয়া সিন্ডিকেট’ই নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সরকারবিরোধী এই জোটের নেতারা বলেন, সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট একচেটিয়া কোম্পানি বাজারে আধিপত্য তৈরি করে, সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তার মধ্যে আবার একজন সবার ওপর প্রভুত্ব করে। সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সেই কোম্পানির নাম দেশের সবাই জানে। এখন সেই কোম্পানিকে সরকার কোলে বসিয়ে রেখেছে নাকি সরকারই সিন্ডিকেটের কোলে বসে আছে? সরকারের ঘনিষ্ঠ সেই কোম্পানি এখন পুরো বাজারের ওপরে কর্তৃত্ব কায়েম করেছে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এক অবস্থান কর্মসূচিতে নেতারা বলেন, এই সরকার যতদিন থাকবে মানুষের দুর্ভোগ তত বেশি বাড়তে থাকবে। ৭ জানুয়ারি মানুষ ভোট নিয়ে ক্ষমতায় বসেনি। কীভাবে ক্ষমতায় বসেছে তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন দেশবাসীকে জানিয়ে যাচ্ছেন। ভারত যদি না থাকতো নির্বাচন নির্বাচন খেলা সম্ভব হতো না, ভারত যদি সমর্থন না দিতো ‘ডামি’ নির্বাচনে সরকার গঠন করতে পারতো না। ওবায়দুল কাদেরকে সেজন্য প্রতিদিন ভারতের প্রতি আনুগত্য ও দাসত্বের অনুগতর কথা উচ্চারণ করতে হচ্ছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এফবিসিসিআই নেতারা বলেছে যে, তিনটি কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। একটা হলো সিন্ডিকেট, একটা হলো চাঁদাবাজি এবং আরেকটা হচ্ছে ডলার। সেদিন দেখলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, সিন্ডিকেটে বিএনপি আছে কি না, এটা খুঁজে দেখতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাজারে চলছে নৈরাজ্য। সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কারণটা হচ্ছে, যারা ব্যবসায়ী এবং যারা সিন্ডিকেট তাদের না কি সরকার খুঁজে পাচ্ছে না। কোথায় পাবেন তাদের? তারা তো সরকারের ভিতরে আছে এবং তারা সংসদ দখল করে নিয়েছে। মন্ত্রী পরিষদে তাদের অবস্থান। সুতরাং, সিন্ডিকেট এবং সরকার এখন একাকার।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কোনো সরকার নাই। ব্যাংক ডাকাত, ব্যাংকের দুর্বৃত্ত এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মাফিয়ারা আজকে দেশে একটা রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। আইনের শাসনকে বিদায় দিয়েছে। এক ধরনের নৈরাজ্য বাজার থেকে শুরু করে সমস্ত পর্যায়ে চলছে। সোমালিয়ার জলদস্যুরা যেভাবে আমাদের বাণিজ্যিক জাহাজকে বন্দুকের মুখে তারা জিম্মি করেছে, এই সরকারও জনগণ দ্বারা প্রত্যাখাত হয়ে রাষ্ট্রীয় শক্তিকে ব্যবহার করে গোটা দেশের ১৮ কোটি মানুষকে জিম্মি করেছে। গভীর অনিশ্চয়তার দিকে তারা দেশকে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারকে ‘নাকে খত দিয়ে’ বিদায় করতে আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, আবু ইউসুফ সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, মোশাররফ হোসেন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নি শিখা জামালী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।