অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, আলবানিজ ইসরায়েলের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছেন এবং দেশটির ইহুদি সম্প্রদায়কে ত্যাগ করেছেন। দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই এই অভিযোগ উঠেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয় যখন অস্ট্রেলিয়া নেতানিয়াহুর জোট সরকারের সদস্য কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিক সিমচা রথম্যানের ভিসা বাতিল করে। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে নিযুক্ত অস্ট্রেলীয় প্রতিনিধিদের ভিসা বাতিল করে।
বিবিসি জানায়, ঘটনাটি ঘটে এমন সময় যখন ক্যানবেরা ঘোষণা দেয় যে, তারা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার মতো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু। তবে অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, তিনি নেতানিয়াহুর মন্তব্যকে ব্যক্তিগতভাবে নিচ্ছেন না। তার ভাষায়, “আমি সবসময় অন্য দেশের নেতাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করি এবং কূটনৈতিকভাবে বিষয়গুলো সামলাই।”অন্যদিকে ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ নেতানিয়াহুর মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, এসব আক্রমণ আসলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।
জানা গেছে, প্রথম উত্তেজনা শুরু হয় যখন সিমচা রথম্যানকে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি সংগঠন অস্ট্রেলিয়ান জিউইশ অ্যাসোসিয়েশন (AJA) আয়োজিত কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ভিসা দেওয়া হলেও তা বাতিল করা হয়। অস্ট্রেলীয় সরকার জানায়, যারা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় তাদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।এর আগেও, ২০২৪ সালে ইসরায়েলের সাবেক ডানপন্থি বিচারমন্ত্রী আয়েলেত শাকেদের ভিসা বাতিল করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
রথম্যানের ভিসা বাতিলের পর ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সা’র সতর্ক করে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকারি ভিসা আবেদনগুলো এখন থেকে কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। তিনি দাবি করেন, অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ (অ্যান্টিসেমিটিজম) বেড়ে চললেও দেশটির সরকার বরং পরিস্থিতিকে উসকে দিচ্ছে। উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রতি একের পর এক ইহুদিবিদ্বেষী হামলার ঘটনা ঘটেছে, যদিও দেশটিতে মাথাপিছু সবচেয়ে বেশি হলোকাস্ট-উত্তর জীবিত সম্প্রদায় রয়েছে।
এদিকে এজেএ জানিয়েছে, রথম্যান সরাসরি উপস্থিত না হলেও ভার্চুয়ালি তাদের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানায়, অস্ট্রেলিয়ার ইহুদি সম্প্রদায় কখনোই নিজেদের রাজনীতিবিদদের সামনে নতি স্বীকার করবে না।