৫০টি অ্যাম্বুলেন্সে করে নেয়া হল ইসরায়েলি সেনাদের লাশ, এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সহিংস হামলা হিজবুল্লাহর, খতম গোলানী ব্রিগেডের আস্ত এক ঘাঁটি। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরায়েল ভূখণ্ডের আক্রে ও হাইফার শহরে ইহুদি বাহিনীর গোলানী ব্রিগেডের সামরিক ঘাঁটি ও স্থাপনায় এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সহিংস হামলা চালিয়েছে, যার ফলে অসংখ্য ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি মিডিয়া স্বীকার করেছে যে, এক ঝাক কামিকাজে ড্রোন হাইফার দক্ষিণে বিনিয়ামিনা এলাকায় আঘাত করে। এতে ২৯ জন সেনা স্পটেই নিহত হয়। এবং নিহতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে জানিয়েছে হিব্রু মিডিয়া। যেখানে ৮৪ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে অনেকেই গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। হিব্রু পত্রিকার সূত্রগুলো বলেছে, এক স্কোয়াড্রন কামিকাজে ড্রোন হাইফার দক্ষিণে সাইরেন বাজানোর আগেই একটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে আঘাত করেছে।
ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক নিহত ও আহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহত ইসরায়েলি সেনাদের দেহ স্থানান্তর এবং আহতদের সরিয়ে নিতে সেখানে অন্তত ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স উপস্থিত হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এক ঝাক কামিকাজে ড্রোন আক্রের একটি গোলানি ব্রিগেডের ডাইনিং রুমে সরাসরি আঘাত হানে এবং সেখানে গুরুতর এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। ইসলামিক প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ তাদের একটি বিবৃতিতে সাধারণ ইসরায়েলি নাগরিকদের আগেই হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল যাতে তারা দখলদার বাহিনীর সামরিক ঘাঁটির কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, যতক্ষণ না পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরেকটি বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ ঘোষণা করেছে যে, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি দখলদার সৈন্যদের সঙ্গে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে সংঘর্ষ করেছে, এবং উত্তর ফিলিস্তিনে দখলকৃত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে। তারা উত্তরে দখলকৃত ফিলিস্তিন থেকে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি দখলদারির চেষ্টা প্রতিরোধ করে দিয়েছে। যখন একটি ইসরায়েলি দখলদার পদাতিক বাহিনী বৈরুতের স্থানীয় সময় অনুযায়ী দুপুর সোয়া ১ টায় দক্ষিণ দিক থেকে আল-কাওজাহ শহরে প্রবেশ করতে চেষ্টা করছিল,তখন ইসলামিক প্রতিরোধের যোদ্ধারা মেশিন গান দিয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ করে।
এছাড়া তাদের যোদ্ধারা ব্লিদা শহরে ইসরায়েলি শত্রু বাহিনীর সঙ্গে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে যুদ্ধ করেছে এবং ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে।” হিজবুল্লাহর বিবৃতি অনুযায়ী, যখন ইসরায়েলি শত্রুদের পদাতিক বাহিনী ব্লিদা শহরের ক্যানান হাইটসে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিল, তখন স্থানীয় সময় সকাল ১০:০০ টায় প্রতিরোধের যোদ্ধারা মেশিন গান দিয়ে দখলদার বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদের অনেক সদস্য নিহত ও আহত হয়। সকাল সোয়া ১০ টায় ইসলামিক প্রতিরোধের যোদ্ধারা মারৌন আল-রাস শহরে ইসরায়েলি শত্রু বাহিনীর একটি ঘাঁটিকে আর্টিলারি শেলের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেয়।
আরেকটি বিবৃতিতে, লেবাননের ইসলামিক প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ নিশ্চিত করেছে যে, তারা সকাল ৯:৩০ টায় দক্ষিণ হাইফার তিরা আল-কর্মেল ঘাঁটিতে একটি মিসাইল বর্ষণ করে। বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয় , হিজবুল্লাহ বাহিনী ফিলিস্তিন ও লেবাননের গর্বিত ও নিপীড়িত মানুষের রক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকবে এবং শত্রুপক্ষকে তার দম্ভ ও আগ্রাসন থেকে নিবৃত্ত করার জন্য নিজের কর্তব্য পালন করতে কখনও পিছপা হবে না।